র‌্যাগিং পরিস্থিতি সামলাতে চেষ্টা অব্যাহত ছিল: বুয়েট উপাচার্য

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সাম্প্র্রতিককালে বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং বন্ধে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এক সাক্ষাত্কারে এ কথা বলেন তিনি। উপাচার্য জানান, চলতি বছরের জুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, ইনস্টিটিউটসমূহের পরিচালকদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সেশন পর্যালোচনা কমিটির এক সভায় র্যাগিংয়ের নামে শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়ে বিভাগীয় প্রধানরা তাকে জানান। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

কিছু অভিভাবকও র‌্যাগিং সম্পর্কে বিভাগীয় প্রধানদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন বলে বিভাগীয় প্রধানরা জানান। অভিযোগ শুনে আমি যথেষ্ট দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। সে সময় সভায় ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার উপস্থিত না থাকায়, আমি সঙ্গে সঙ্গে সভার মাঝ থেকে সবার সামনেই তাকে ফোন করে এসব বিষয়ে জানতে চাই। তাকে বলি যে, নতুন ছাত্রদের মনিটরিং করার জন্য কমিটি গঠন করা আছে।

প্রত্যেক দিন হলগুলোতে দেখভাল করলে এমনটি হওয়ার কথা না। জবাবে তিনি বলেন যে, এই কমিটির সদস্যরা রাত একটা পর্যন্ত তদারকি করেছে এবং সমস্যা নেই, কোনো অসুবিধা নেই। অভিযোগসমূহের কোনো প্রমাণ নেই। তখন আমার সত্যি সত্যিই খারাপ লেগেছিল। অভিযোগ এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের কথাগুলো শুনে আমি চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। 

পরে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের এক সভা শেষে অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার উপাচার্যকে জানান যে, তার পক্ষে ঐ পদে কাজ করা আর সম্ভব নয়। পরবর্তীতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক পদে অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়াকে নিয়োগ দেন উপাচার্য। তবে তত্কালীন ছাত্রনেতাদের তীব্র বিরোধিতার কারণে অধ্যাপক আবুল কাশেম মিয়াকেও অবিলম্বে পদ ছাড়তে হয়। অধ্যাপক কাশেমের স্থলাভিষিক্ত হন অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

প্রথমদিকে তিনি কিছু ভালো উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং কিছু অপরাধী শিক্ষার্থীকে শাস্তিও দিয়েছিলেন। এটা দেখে আমি অনেকখানি আশান্বিত হই এবং তাকে সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেই। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পর আমি দেখতে পেলাম যে- অধ্যাপক মিজানও নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। আমি এখানে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। কারণ এসব বিষয় দেখাশোনার দায়িত্ব ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের।

উপাচার্য মনে করেন যে, হত্যাকাণ্ড পরবর্তীতে পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে তার কোনো ব্যর্থতা নেই। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং তড়িত্ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ড ঘটার পরে আমার অফিসেই বিভিন্নভাবে আমাকে কাজ করতে হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি এবং সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছি।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই কেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেন দেখা করেননি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিস্থিতি ছিল অস্বাভাবিক উত্তেজনাপূর্ণ, শিক্ষার্থীরা ছিল ক্ষুব্ধ। আমি সেখানে গেলে কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমাকে জিম্মি করে রাখার অনেক বেশি সম্ভাবনা ছিল। তখন আমি আর সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারতাম না, কিন্তু যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়াটাই সে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের। এটিই পরিচালকের প্রধান কর্তব্য। তিনি উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা নেবেন। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখার কথাও তার। ঘটনার দিন সকাল ১১টার সভা থেকে রাত সাড়ে ৮টা অবধি ছাত্রকল্যাণ পরিচালক উপাচার্যের অফিস কক্ষেই অবস্থান করছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025019645690918