রীতিমতো অলৌকিক ঘটনাই বলতে হবে একে। ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলে লন্ডভন্ড লিবিয়ার উপকূলীয় শহর দেরনার একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে ৪ দিন পর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে নবজাতক এক মেয়েশিশুকে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। যে ধ্বংসস্তূপ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে বা তার আশপাশে শিশুটির পিতা-মাতা কিংবা কোনো আত্মীয় স্বজনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধারের পর দেখা গেছে, তার শরীরের সঙ্গে তখনও নাড়ি সংযুক্ত। অর্থাৎ জন্মের পর তার নাড়ি কাটা হয়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা হয়েছে শিশুটিকে উদ্ধারের ভিডিও। এবং সেখানে দেখা গেছে, সাধারণ নাগরিক এবং উদ্ধারকারী কর্মীদের একটি দল ধ্বংসস্তূপের জঞ্জাল সরিয়ে নবজাতক সেই শিশুটিকে উদ্ধার করে একটি নীল রঙের তোয়ালেতে জড়িয়ে রাখছেন। এ সময় মাঝে মাঝেই কেঁদে উঠছে শিশুটি; অন্যদিকে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরে আনন্দ চিৎকার করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) সেই ভিডিও পোস্টের পর ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও। তবে উদ্ধারের পর দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শিশুটির অভিভাকত্ব দাবি করে কেউ এগিয়ে আসেননি বলে জানা গেছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর দেরনায় আছড়ে পড়ে ভূমধ্যসাগরে উদ্ভূত প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল। ঝড়ের ফলে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং শহরটি ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ওয়াদি দেরনা নদীর বাঁধ ভেঙে লাখ লাখ গ্যালন পানি শহরের ভেতরে প্রবেশ করায় আক্ষরিক অর্থেই ভেসে যায় শহরটি।
বস্তুত, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-বন্যায় দেরনার অধিকাংশ আবাসিক ভবন ভেঙে পড়েছে এবং সেসব ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে এখনও উদ্ধার হচ্ছে শত শত দেহ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় দিনে দেরনার বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মরদেহ এবং এখনও অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস-বন্যায় ইতোমধ্যে শহরের ৩০ শতাংশ অঞ্চল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।