ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের আদেশ বাতিলের নেপথ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে অভিযুক্ত রকিকুল ইসলামকে বদলি ও তা বাতিলের ঘটনায় শিক্ষা প্রশাসনে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ৪ঠা ফেব্রুয়ারি রাজধানীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে রফিকুল ইসলামকে বদলি করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। স্কাউটের টাকা আত্মসাৎ, এমপিওভুক্তিতে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের কারণে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। এত অভিযোগের পরও রফিকুল ইসলামকে গুরুত্বপূর্ণ এমন একটি স্কুলে বদলির পর তোলপাড় শুরু হয় মন্ত্রণালয়ে। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবের নজরে আসলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বৃহস্পতিবারই রফিকুলের আদেশ বাতিল করা হয়। এ ছাড়া কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসের স্কুল পরিদর্শক মো. মকবুল হোসেনকে কুমিল্লা জেলা স্কুলে বদলির আদেশ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাতিল করার ফাইল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে বিভাগীয় মামলা থাকায় বিষয়টি তাদের নজরে ছিল না। বদলির পর তারা জানতে পেরেছেন এজন্য আদেশ বাতিল করা হয়েছে।

অপর একটি সূত্র জানায়, সরকারি হাইস্কুলে বদলি ও পদায়নের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, গৌর চন্দ্র মন্ডল ও মাউশির সাবেক একজন উপরিচালকসহ কয়েকজন রয়েছেন। এই সিন্ডিকেটের প্রার্থী ছিলেন রফিকুল। এই সিন্ডিকেট রফিকুলের তথ্য গোপন করেছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ খ্রিস্টাব্দে মাউশির রংপুর আঞ্চলিক অফিসে উপ-পরিচালক পদে থাকার সময় রফিকুলের বিরুদ্ধে স্কাউটের ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, রংপুর অঞ্চলের দুই হাজার ৬৫৯টি মাদরাসা থেকে চাঁদা তুলে তা আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি ও এমপিও পেতে ঘুষ নেয়াসহ নানা অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) সফিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি এসব অভিযোগের প্রমাণ পায়। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে তাকে পিরোজপুরের কাউখালী সরকারি হাইস্কুলে বদলি করা হয়। কয়েকদিনের ব্যবধানে তিনি  দিনাজপুরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হয়ে চলে আসেন। গত বছরের ১৫ই ডিসেম্বর রাজধানীর ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পদ খালি হওয়ার পর তিনি লবিং শুরু করেন। মন্ত্রণালয় ও  অধিদপ্তরের একটি চক্র তার ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য (পিডিএস) গোপন রেখে তাকে গভর্নমেন্ট ল্যাবলেটরি স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে বদলি করে।   

মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) আবদুল মান্না বলেন, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে মামলা হওয়ায় আমরা জানতে পারিনি। এখন থেকে সব বদলির অর্ডারে পিডিএস দেখে বদলি করবো। তিনি বলেন, যে কয়জনের নাম প্রস্তাব ছিল তার মধ্যে তার ছাড়া বাকিদের পিডিএস আমার জানা ছিল। অধিদপ্তর থেকে ৫ জন প্রার্থীর নাম মন্ত্রণালয়ে পাঠোনো হয়। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044770240783691