শাবিপ্রবির গবেষণা ও উন্নয়ন

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাবিপ্রবি হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৩০ বছর অতিক্রম করেছে। শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করে সে তার আলোকোজ্জ্বল দীপ্তি ছড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে। ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র তিনটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে; বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে তার রয়েছে ২৭টি বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)  সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ঠিক ৩০ বছর আগে এদিন যাত্রা শুরু হয়েছিল শাবিপ্রবির। আড়াই যুগেরও অধিক সময় ধরে বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে এক অনন্য ধাঁচে পৌঁছিয়েছে শাবিপ্রবি। বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোল মডেল শাবিপ্রবি অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গেছে একটা সময়। তারপরও থেমে থাকেনি তার অবদান গবেষণা ও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায়। গত ৩০ বছরে শাবিপ্রবির অর্জন লিখে শেষ করার মতো না। তার মধ্যে মোবাইলে ভর্তি প্রক্রিয়া অন্যতম, যা লাঘব হয়েছে হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মূল্যবান সময়। একটি খুদে বার্তার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পাদন করা, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে। শাবিপ্রবিই প্রথম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, যার সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক আওতাধীন। তার অন্যান্য উদ্ভাবনের মধ্যে ক্যান্সার শনাক্তকরণ, পিপীলিকা নামক সার্চ ইঞ্জিন, উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন আবিস্কার উল্লেখযোগ্য। ৩০ বছরে আমাদের আত্মতৃপ্তি যেমনি আছে, তেমনি আছে অপূর্ণতাও। কারণ একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুযোগ-সুবিধা ও বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার, এর অনেকাংশ থেকে আমরা বঞ্চিত।

শিক্ষার উন্নয়ন কিংবা গবেষণার মূল হাতিয়ার হচ্ছে অর্থ, যদি ঠিকমতো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া যায়, তাহলে গবেষণায় গতি আসে না এবং তা অধিকতর মানব উন্নয়নে ব্যবহার করা যায় না। সর্বোপরি ভাইস চ্যান্সেলর চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্বিকভাবে এগিয়ে নিতে। এর জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করছেন। শাবিপ্রবি বর্তমান উপাচার্য যোগ দেওয়ার পর অর্থ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান হয়েছে। এখন প্রত্যেক শিক্ষকই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য রিসার্চ সেন্টার থেকে বরাদ্দ পাচ্ছেন এবং তা দিয়ে মানসম্পন্ন গবেষণা করছেন। শাবিপ্রবিতে অন্যতম সমস্যা ছিল সেশনজট নিরসন, যা বর্তমান উপাচার্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন এবং এখন শাবিপ্রবি পূর্ণ সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আসা-যাওয়ার জন্য অনেক বাস সংযুক্ত করা হয়েছে।

কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর পরও শিক্ষকদের জন্য এসি বাস সংযুক্ত করা হয়নি। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর ৫টির বেশি এসি বাস পরিবহনপুলে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং অনেক বাস কেনা প্রক্রিয়াধীন। শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বর্তমান উপাচার্য ক্ষমতা গ্রহণের পর মানসম্মত ক্যাফেটেরিয়া চালু হয়েছে, যাতে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারছেন। প্লাজিরিজম করে যাতে গবেষকরা পার পেয়ে না যেতে পারেন, তার জন্য সেন্ট্রালি ১১০০-এর বেশি শিক্ষক লগইন করে তা চেক করতে পারেন- এমন একটি সাভির্স চালু হচ্ছে শিগগিরই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এত বিশাল অঙ্কের বাজেট আসেনি, যা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ওপর। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে আবাসন, একাডেমিক ভবন সংকট, গবেষণাগার তৈরি, পরিবহন সমস্যা ইত্যাদি দূরীভূত হবে। সমাবর্তনের মতো শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান প্রায় ১২ বছর পর অনুষ্ঠিত হয় বর্তমান উপাচার্যের একান্ত প্রচেষ্টায়। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় উপাচার্যের হাত ধরে এগিয়ে যাক শাবিপ্রবি এবং তা অবদান রাখুক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। শুভ জন্মদিন শাবিপ্রবি। অনন্ত যৌবনা হয়ে তোমার আলোকরশ্মি ছড়িয়ে পড়ূক দেশ-বিদেশে।

লেখক: জিয়া আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ, শাবিপ্রবি, সিলেট


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026810169219971