প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় পর আগামীকাল (১ ডিসেম্বর) বুধবার থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকার্য শুরু হচ্ছে।
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ ডিসেম্বর থেকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শারীরিক উপস্থিতিতে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকাজ পরিচালিত হবে। এতে জাননো হয়, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
গত বছর মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে মিল রেখে দেশের সব আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর ফলে দেশের বিচার ব্যবস্থা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পরে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়ে গত বছর ৯ মে অধ্যাদেশ জারি হয়। পরদিন সুপ্রিম কোর্ট ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘প্র্যাকটিস’ নির্দেশনা জারি করে। ১১ মে দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথমবার ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকলে প্রথমে কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে নিম্ন আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়। পরে হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চেও শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম চালু করা হয়। পাশাপাশি ভার্চুয়াল আদালতও চালু থাকে। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, অর্থাৎ আপিল বিভাগ এবং চেম্বার আদালত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেই চলে আসছিল।
চলতি বছর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওইদিন রাতেই সীমিত পরিসরে দেশের আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত আসে প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে।
বিচার বিভাগ প্রধানের আদেশে এ সংক্রান্ত আলাদা তিনটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। তাতে বলা হয়, ৬ এপ্রিল থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুধু আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত, হাইকোর্টের চারটি বেঞ্চ চালু থাকবে। আর মুখ্য বিচারকি হাকিম বা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত সীমিত পরিসরে চালু থাকবে, তবে সব অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এরপর গত ১৩ এপ্রিল আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ভার্চুয়ালি সীমিত পরিসরে আপিল বিভাগের বিচারকাজ পরিচালনার কথা জানানো হয়। এরপর ১৩ জুলাই আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচরাপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ১৮ জুলাই থেকে প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বেলা সোয়া ১ টা বিচারকাজ পরিচালনা করবে। এরপর এভাবেই চলে আসছিল সর্বোচ্চ আদালতের বিচার কার্যক্রম।
