শিক্ষকতার লোভ দেখিয়ে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রধান শিক্ষক শ্রীঘরে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

কুড়িগ্রামে শিক্ষক হিসেবে চাকরি দেয়ার লোভ দেখিয়ে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীনের বিরুদ্ধে। তিনি বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। বর্তমানে তিনি অর্থ কেলেঙ্কারির মামলায় জেলহাজতে আছেন বলে জানা গেছে। 

মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীন উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের মো: আনছার আলী আমীনের ছেলে। এ ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন চাকরী প্রার্থী ভুক্তভোগীরা।

মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের নামে মো. জাহাঙ্গীর আলম, রঞ্জু মিয়া, আলমগীরসহ স্থানীয় ৮-৯ জন বেকার যুবকের কাছ থেকে মোট ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে চাকরি না দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেন ওই শিক্ষক। ঘুষ দিয়ে শিক্ষক হতে চাওয়া প্রার্থীরা পরে আদালতের দারস্ত হন। আদালত মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীনকে জেলহাজতে পাঠান।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ ১ বছর ৪ মাস জেল খাটার পর মামলা মীমাংসার কথা বলে হাইকোর্ট থেকে ২ মাসের জামিন নিয়ে জেল থেকে বেড়িয়ে আসেন সফিকুর রহমান নুরুল আমীন। কিন্তু বের হয়ে আসার পর ভুক্তভোগীদের সঙ্গে মামলা মীমাংসা না করে আবারো বিদ্যালয়ের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও বিষয়টি  মীমাংসা না করায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালত তাকে আবারো কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে আছেন। এ অবস্থা চাকরি না পেয়ে হতাশা আর ঋণের বোঝা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রার্থীরা।

ঘুষ দিয়ে শিক্ষক হতে চাওয়া প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের চাকরি দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুর রহমান নুরুল আমীন। আমরা সবাই বেকার আর দরিদ্র পরিবারের লোকজন সহায় সম্বল বিক্রি করে ঋণ করে ওই শিক্ষকের হাতে টাকা তুলে দিয়েছি। এখন আমরা টাকা ফেরত চাই। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বিজ্ঞ আদালতের কাছে সবিনয়ে অনুরোধ করছি সফিকুর রহমান নুরুল আমীনকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে আদালতের মাধ্যমে আমাদের টাকা ফিরে দেয়া হোক।

জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফরোজা বেগম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রার্থীদের চাকরি দেয়ার কথা বলে চেকের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করায় চেকের মামলায় সাবেক প্রধান শিক্ষক মো: সফিকুর রহমান বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শামসুল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বজরা সবুজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো: সফিকুর রহমান নুরুল আমীন নানান অভিযোগ ও অনিয়মে জেল হাজতে আছেন। অর্থ কেলেঙ্কারি মামলার দায়ে যেহেতু তিনি কারাগারে আছেন আদালত তার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047171115875244