শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬২ বছর চায় প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি |

সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ। একইসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের পাওয়া সরকারি সুবিধার বৈষম্য নিরসন ও শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু করতেও সরকারের কাছে দাবি জানান তারা। 

শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় এম এ সাত্তার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে আয়োজিত ‘মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে মতবিনিময়’ সভায় এসব দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।

সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। সংগঠনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি মো. আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নৃপেন চন্দ্র দাস। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবুল।   

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি  রামকৃষ্ণ মিত্র, মোহাম্মদ শফি উদ্দিন, শেখ মোহাম্মদ ফেরদাউস হেলাল, গৌতম কুমার সাহা, সহ-প্রকাশনা সম্পাদক আশরাফুজ্জামান,যুগ্ম সম্পাদক মো.কাজী গিয়াস উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল চন্দ্র চৌধুরী, সহ-আইন সম্পাদক তালুকদার আবদুল মান্নান, সদস্য আব্দুল গণি সরকার। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন পরিষদের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন  ফারুকসহ জেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান শিক্ষকরা। 

অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা কয়েকদফা দাবি জানান। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করা, শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূর করা, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের যথাক্রমে ষষ্ঠ গ্রেড এবং সপ্তম গ্রেডে বেতন দেয়া, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের চাকরি জীবনে দুটি উচ্চতর স্কেল দেয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা, এমপিওভুক্ত পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দেয়া, শিক্ষকদের ঐচ্ছিক বদলি ব্যবস্থা চালু করা এবং মাধ্যমিক স্তরের এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষায় সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য নিরসনের দাবি জানান সভাপতি নৃপেন চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশে সীমাহীন অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যেও প্রাথমিক শিক্ষাকে সরকারিকরণ করে গেছেন। তারপর অর্ধশত বছর পার হলেও মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ হলো না। বৈষম্যের শিকার থেকে গেলো মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাই বার বার আফসোস করে বলতে শোনা যায়, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে শিক্ষার এ বৈষম্য নিরসন হতোই হতো। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে তাঁর বাবার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করে যাচ্ছেন, সে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণ করবেনই করবেন-এ আমাদের বিশ্বাস।

প্রধান আলোচক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবুল বলেন, শিক্ষকতায় অভিজ্ঞতার গুরুত্ব অনেক। তাই সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করেছে। তবে আমরা সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৫৯ বছরই আছে। আমরা স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের অবসরগ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করার দাবি জানাই। তিনি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের যথাক্রমে ষষ্ঠ গ্রেড এবং সপ্তম গ্রেডে বেতন দেয়া ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু করার জোর দাবি জানান।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031249523162842