যশোরের কেশবপুর ভালুকঘর আজিজিয়া ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক হাদিউজজ্জামান সোহাগের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন ও ইউএনও অফিস চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। আহত ওই শিক্ষক বর্তমানে কেশবপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় কেশবপুর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মাদরাসার দুর্নীতির প্রতিবাদ ও কিছু তথ্য সংগ্রহ করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ছেলের নেতৃত্বে তার ওপর হামলা হয়েছে বলে চিকিৎসারত অবস্থায় দাবি করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। হাদিউজ্জামান সোহাগ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ওই মাদরাসায় এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে আরবি প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার সাথে ওই মাদরাসায় আরও ৪ জন যোগদান করেন। তারা হলেন, মানছুরা খাতুন, ফতেমা খাতুন, সালমা খাতুন ও ছায়েরা খাতুন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হাই ভয় দেখিয়ে পদ অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্য করেন। এসবের প্রমাণপত্র রেকর্ড করে রাখেন প্রভাষক হাদিউজজ্জামান সোহাগ। শিক্ষক সোহাগের দাবি, ওই সব প্রমাণপত্র পাওয়ার জন্যে অধ্যক্ষ তাকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও তথ্য প্রমাণ ফেরত না দেয়ায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের জবাব দেয়ার আগেই ১৭ সেপ্টেম্বর মাদরাসা ছুটির পর মসজিদের সামনে পৌঁছুলে অধ্যক্ষ আব্দুল হাইয়ের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহাফুজ তার গতিরোধ করে কাঠ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক সোহাগ। এ সময় রেকর্ড নষ্ট করতে তার মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলা হয়। আহত অবস্থায় এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনা জানাজানির পর বুধবার ওই মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে হামলাকারী আব্দুল্লাহ আল মাহাফুজকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। তারপর বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ৬ কিলোমিটার পথ হেটে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে শিক্ষককে হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন,‘অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীরা উপজেলা প্রশাসন অফিসের সামনে আসার পর নির্বাহী অফিসার শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। এসময় থানা পুলিশকে হামলাকারীকে আইনের আওতায় আনার কথাও বলেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহিন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।