কুড়িগ্রামে এক শিক্ষকের ছেলেকে হত্যার দীর্ঘ ১৮ বছর পর ওই মামলার আসামি চার ভাইসহ আট জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত। সোমবার দুপুরের এ রায় দেন বিচারক আব্দুল মান্নান। পিপি অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক মোখলেছুর রহমানের চতুর্থ ছেলে মুদিদোকানি নুরনবী মিয়াকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শিক্ষক মোখলেছুর রহমান বাদি হয়ে চিলমারী থানায় নয় জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকার বাসিন্দা মুদি দোকানদার নুরনবী মিয়া এবং সড়কটারী গ্রামের বাসিন্দা খেতু শেখের ছেলে মোছলেম উদ্দিনের সঙ্গে গম খেতে পানি দেয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ বাধে। এক পর্যায় নুরনবী মিয়াকে মারধর করে ও মেরে ফেলার হুমকি দেয় মোছলেম উদ্দিনরা। পরে গ্রাম্য সালিশে মোছলেম উদ্দিন ও তার ছোট ভাই রাশেদের সঙ্গে নুরনবীর বিবাদ মীমাংসা করে দেয়া হয়। এরপর নুরনবী এবং রাশেদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে রাশেদ প্রায় সময় নুরনবীর মুদি দোকানে একসঙ্গে রাত্রিযাপন করতো। গত ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জানুয়ারি রাতেও রাশেদ ও নূরনবী দোকানে রাত্রিযাপন করে। পরের দিন সকালে গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় নুরনবীর লাশ উদ্ধার করে তার স্বজনরা। এ ঘটনায় মামলা করেছিলেন নুরনবীর শিক্ষক বাবা।
দীর্ঘ ১৮বছর ধরে বিচার কার্যক্রমে ৪৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার দুপুরে আট জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল মান্নান।
আসামিরা হলেন, রাশেদ মিয়া (২২), মকবুল হোসেন (৩৫), তছলিম উদ্দিন (৩২), মোছলেম উদ্দিন, আব্দুল কাদের (২৫), মিন্টু মিয়া (২৩), মোনাল উদ্দিন (২৫) ও নুরুমিয়া। অপর আসামি চাঁন মিয়া মারা গেছেন। আসামিদের মধ্যে রাশেদ মিয়া (২২), মকবুল হোসেন (৩৫), তছলিম উদ্দিন (৩২), মোছলেম উদ্দিন চার ভাই। তাদের বাবার নাম খেতু শেখ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন ও শামছুদ্দোহা রুবেল।