খাগড়াছড়ির পানছড়ির লোগাং বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশাদন চাকমার থাপ্পড়ে আহত হয়ে পানছড়ি হাসপাতালে ভর্তি হয় এক ছাত্রী। পড়া বলতে দেরি করায় তার কান ও গালে সজোরে আঘাত করার ফলে ওই ছাত্রীর নাক ফেটে রক্ত বের হয়।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টিফিন পরবর্তী প্রথম ঘণ্টায় লোগাং বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই ছাত্রী ওই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের শিক্ষক আশাধন চাকমা বাংলা দ্বিতীয়পত্র নিতে ক্লাসে আসেন। পাঠদানের একপর্যায়ে আহত ছাত্রীকে পড়া ধরলে সে তাৎক্ষণিক উত্তর দিতে পারেনি। এসময় ওই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর নাকে-গালে সজোরে থাপ্পড় দেন। পরে ওই ছাত্রীর নাক দিয়ে রক্ত বের হয়। এসময় ফ্লোরে অনেক রক্ত পড়ে। এরপর তারা তাদের সহপাঠীর নাকের রক্ত পানি দিয়ে পরিষ্কার করে। পরে তাদের শিক্ষক পানি দিয়ে দ্রুত ফ্লোরের রক্ত ধুয়ে ফেলেন। এর আগেও ওই শিক্ষক অনেকের গায়ে হাত তুলেছেন বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
আহ শিক্ষার্থীরা মা বলেন, ‘আশাধন স্যার আমার মেয়ের নাকে-গালে অনেকগুলো থাপ্পড় দিয়েছে। যার কারণে তার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে।’
আহত শিক্ষার্থী বলে, ‘স্যার আমাকে একটা পড়া ধরেন। পড়াটা আমি পারি কিন্তু মুখ দিয়ে বের হচ্ছিল না। তখন আমার নাকে-মুখে এবং মাথায় অনেকগুলো থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে আমার নাক ফেটে রক্ত বের হয়। আমি নাকের ব্যথায় কথা বলতে পারছি না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির চাকমা বলেন, ‘ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে গেছে। থাপ্পড়ে আহত ছাত্রী আমার কাছে বিচার নিয়ে এলে আমি তার অভিভাবকের সামনে শিক্ষককে ডাকিয়ে সতর্ক করি। ছাত্রীর চিকিৎসায় যত খরচ হবে তা শিক্ষক বহন করবে। এ বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কি দরকার?’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আশাধন চাকমা বলেন, ‘ক্লাসে আমি বাংলা দ্বিতীয়পত্র পড়াচ্ছিলাম। তখন ছাত্রীটি ক্লাসে মনোযোগী ছিল না। এতে আমি একটু ক্ষিপ্ত ছিলাম। পরে তাকে একটা পড়া ধরি, সে না পারায় আমি তাকে একটা থাপ্পড় মারি। পরে দেখি তার নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। এমনটা হবে আমি বুঝতে পারিনি।’
এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, ‘মেয়েটি এরই মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। এই নিয়ে আজকে বিদ্যালয়ের সভা আহ্বান করা হয়েছে। ভুক্তভোগী চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে।’