শিক্ষকের প্রতারণায় পরীক্ষা দিতে পারেনি ৪ শিক্ষার্থী

অলোক সাহা, ঝালকাঠি |

ঝালকাঠিতে শিক্ষিকার সহায়তায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ের প্রবেশপত্র পেয়েও ৪ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। 

জানা যায়, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার প্রতাপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। ওই শিক্ষক বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের একটি সিন্ডিকেটের সহায়তায় প্রবেশ পত্রের বিনিময়ে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রতারিত হওয়া পরীক্ষার্থী জামাল, নাইম হোসেন, শাওন খান, পারভেজ ও তাদের অভিভাবকরা দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, প্রতাপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল তারা। তাদের বিদ্যালয়ে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় রেজাল্ট ভাল করতে পারেনি। তাই তারা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারায় উদ্বিগ্ন হয়ে পরে। এ খবর পেয়ে শাওনের বাড়ির নিকটবর্তী কাঠিপাড়া আমিরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক আইরিন পারভীন তাদের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি ৪ জনের কাছ থেকে জন প্রতি ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে এই পরীক্ষার্থীদের প্রেমহার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দেয়ার আশ্বাস দেন। কথানুযায়ি সবশেষ ৮ হাজার ৫০০ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক আইরিন পারভীন বরিশাল বোর্ড থেকে প্রেমহার বিদ্যালয়ের প্রবেশ পত্র করিয়ে দেন ওই চার শিক্ষার্থীকে। গত শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২ টার দিকে পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রবেশপত্র ধরিয়ে দিলে তারা কেন্দ্র সচিবের সাথে যোগাযোগ করে।

 প্রেমহার কেন্দ্র সচিব খলিলুর রহমান বিষয়টি জানতে পেরে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিমকে অবহিত কনের।

এ বিষয়ে প্রতাপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, আমাকে গত শুক্রবার রাতে বোর্ডের নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম ফোনে জানান, আমার বিদ্যালয়ের টেস্ট ফেল করা এই ৪ পরীক্ষার্থী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বোর্ড থেকে প্রবেশপত্র বের করেছে। বোর্ডের একটি চক্রের সহায়তায় প্রেমহার বিদ্যালয়ের প্রবেশপত্র বের করে তারা এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি এ খবর পেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে প্রশাসনকে অবহিত করি। এই ঘটনা টের পেয়ে শিক্ষক আইরিন পারভীন চার পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রবেশ পত্রে ত্রুটির কথা বলে তা ফিরিয়ে নেন। 

প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আরো জানান, শিক্ষা বোর্ডের ৩টি স্তর পার হয়ে যেকোন পরীক্ষার্থীর প্রবেশ পত্র ইস্যু হয়। এই ক্ষেত্রে শিক্ষক আইরিনের ভাই প্রফেসর মো. দেলোয়ার হোসেন বরিশাল বোর্ডের সাবেক বোর্ড নিয়ন্ত্রক হওয়ায় তিনি একটি সিন্ডিকেটের সহায়তায় এই প্রবেশ পত্র বের করতে সক্ষম হন। শুনেছি আইরিন মোট ১০ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে এ ভাবে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আইরিন পারভিন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমি একটি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পরেছি। চক্রটি আমার বিরুদ্ধে প্রেমহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিবের কাছে অভিযোগ করে আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমি ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বোর্ডে টাকার বিনিময়ে প্রবেশ পত্র ইস্যু করিয়ে ছিলাম। কেন্দ্র সচিবের কাছে আমার বিরুদ্ধে টাকা নেয়ার অভিযোগ না করলে তারা সহজেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারত।

এবিষয়ে ঝালকাঠি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে ঘটনার সাথে জড়িত যেই থাকুক তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024387836456299