শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ঘুষ নেয়ার অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

বরিশাল প্রতিনিধি |

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩ টাকা করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি এ টাকা নেন। গত এপ্রিলে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রায় ৩৯ হাজার পরীক্ষার্থী বাবদ তিনি প্রায় সোয়া লাখ টাকা নেন। গত শুক্র ও শনিবার অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায়ও ৩ টাকা করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়েছে। বুধবার (৩১ জুলাই) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন সুমন চৌধুরী।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরা এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আনা-নেওয়ার পরিবহন ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে তাদের কাছে পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩ টাকা করে চেয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। গতকাল ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়ও একই হারে তাকে টাকা দিতে হয়েছে। কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষকরা জানান, কেন্দ্র ফি বাবদ যে টাকা পান সেখান থেকে পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩ টাকা করে দেন জেলা শিক্ষা অফিসে। উত্তরপত্র জমা দেওয়ার সময় এ টাকা পরিশোধ করেন তারা।

তবে এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, 'অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরীক্ষা গ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। তিনিই সবকিছু দেখভাল করেন।' 

সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় জেলা পর্যায়ে গঠিত কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক সভাপতি এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিব। পরীক্ষা গ্রহণে যাবতীয় খরচ আহ্বায়কের মাধ্যমে পরিশোধ করে জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। 

সূত্র জানায়, চলমান ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় বরিশাল জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ৩৮ হাজার ৬৪৫ জন। তার মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৫ হাজার ২৩৪ এবং কলেজ পর্যায়ে ১৩ হাজার ৩৮১ জন। প্রিলিমিনারিতে ৩ টাকা করে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৩৫ টাকা আদায় করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হয় স্কুল পর্যায়ে ২ হাজার ৩৪ জন এবং কলেজ পর্যায়ে ৩ হাজার ৮২৭ জন। মোট পরীক্ষার্থী ৫ হাজার ৮৬১। গত শুক্র ও শনিবার নগরীর সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ও সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ কেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের উপাধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ 

পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩ টাকা করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়ার কথা কাছে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, উত্তরপত্র ও পরীক্ষা গ্রহণের আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম জমা দেওয়ার সময় এ টাকা দিতে হয়। হারুন অর রশিদ বলেন, গতকাল (শনিবার) দুপুরে পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে ওই টাকা দেওয়ার তাগাদাও দিয়েছেন। গত এপ্রিলে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ৩ টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপাধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ। 

সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শফিকুর রহমান সিকদার জানান, তার কলেজের কেন্দ্র থেকেও পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩ টাকা করে জেলা শিক্ষা অফিসে দিতে হয়। এ কলেজে পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সহযোগী অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়ও প্রতি পরীক্ষার্থীর জন্য ৩ টাকা করে জেলা শিক্ষা অফিসে দেওয়া হয়েছে। 

পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমানের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, কেন্দ্র ফি বাবদ প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা টাকা পাবেন। উল্টো তাদের টাকা দেওয়ার কোনো খাত নেই। কারা কোন খাত দেখিয়ে ৩ টাকা করে নিচ্ছেন এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002979040145874