শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ

সাঈদ হোসেন |

বেসরকারি নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠার পর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে প্রার্থীদের বাছাই পরীক্ষা নিয়ে আসছে। এ বছর ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা চলছে।

বর্তমানে অনেক শিক্ষকই এনটিআরসিএর সুপারিশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। তবে এ বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই নানা ধরনের অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানকে। ফলে এবার ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে শুরু করেছে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ।

তবে এনটিআরসিএ এর নতুন প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন অনেক পরীক্ষার্থী।

অভিযোগে জানা যায়, অনেকেই আছেন যারা পড়াশুনা করেছেন বিজ্ঞান, মানবিক কিংবা অন্য কোনো শাখার বিষয়ে। তবে তারা তাদের পঠিত বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে নিয়োগ পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। যেমন বিজ্ঞান শাখার উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থ, জীব বিজ্ঞান এবং মানবিক শাখার অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, সমাজবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের বহু প্রার্থী কম্পিউটার এবং কৃষি শিক্ষা বিষয়ে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছেন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করেছেন।

ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখ থেকে শুরু হওয়া শিক্ষক নিবন্ধনের মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসা অনেক প্রার্থীকে ভাইভা বোর্ড থেকে বলা হয়েছে, ‘আপনি তো নিয়োগ পাবেন না।’

এমন কথার প্রেক্ষিতে প্রার্থীরা জানতে চেয়েছেন কেন আমরা নিয়োগ পাব না?

ভাইভা বোর্ড থেকে বলা হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যে শর্ত লেখা আছে সেগুলোর সাথে আপনাদের বিষয় না মেলার কারণে আপনারা নিয়োগ পাবেন না।

প্রার্থীরা হতাশ হয়ে ফিরে আসেন ভাইভা বোর্ড থেকে।

উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করে কম্পিউটার বিষয়ে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন মো. হাফিজুর রহমান। ভাইভা বোর্ডে এক পর্যায়ে তাকে বলা হয় আপনি তো নিয়োগ পাবেন না।

কেন নিয়োগ পাব না হাফিজুর রহমানের এমন প্রশ্নে বোর্ড থেকে বলা হয়, ‘শুধু বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পদার্থ, রসায়ন এবং জীব বিজ্ঞান বিষয়ে যারা পড়াশুনা করেছেন শুধু তারা কম্পিউটার বিষয়ে নিয়োগের সুপারিশ পাবে। তবে তাদের কম্পিউটারের উপর ৬ মাসের একটি কোর্স করা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি তো উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিষয়ের।’

হাফিজুর রহমান বলেন, তাহলে আমার আবেদন পত্র কেন গ্রহণ করা হয় এবং কেন আমাকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়? আমার আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় এবং আমি প্রিলিমিনারী ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। এখন নিয়োগ পরীক্ষার সর্বশেষ ধাপ মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসেছি। আমার আবেদন যথার্থ না হলে আবেদন গ্রহণ করা হল কেন?

এমন প্রশ্নের জবাবে ভাইভা বোর্ড থেকে কোন জবাব দিতে পারে নি।

প্রার্থীর ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আমার নিয়োগের আবেদন যদি বৈধই না হবে তাহলে আমাকে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হল কেন? আবার এখনই বা কেন নিয়োগ না দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে? নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যে শর্ত আছে সে শর্ত পূরণ না হওয়ায় আবেদনের শুরুতেই আমাকে বাদ দেওয়া উচিত ছিল। প্রিলি, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এখন এরকম কথা বলা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত আমরা বুঝতে পারছি না।’

ময়মনসিংহ থেকে কম্পিউটার বিষয়ে নিয়োগের জন্য মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছিলেন ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের একজন প্রার্থী। তিনি কম্পিউটারের উপর ৬ মাসের একটি কোর্সও করেছেন। তাকেও ভাইভা বোর্ড থেকে একই কথা বলা হয়।

এরকম আরও কয়েকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে। তারা এই ধরনের একই অভিযোগ করেছেন।

এসব সমস্যার সমাধান করে সুষ্ঠুভাবে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষকতা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী প্রার্থীরা দাবী জানিয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025360584259033