বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) দ্বিতীয় চক্রের শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদের ভুল তথ্য দিয়েছিল কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান। ফলে, শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও কয়েক হাজার প্রার্থী যোগদান ও এমপিওভুক্ত হতে জটিলতায় পড়েছিলেন। মহিলা কোটা, নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ, প্যাটার্ন জটিলতাসহ নানা সমস্যায় তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। এসব জটিলতার মূলে ছিলেন শূন্যপদের ভুল তথ্য পাঠানো প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক নিয়োগেরর ভুল তথ্য পাঠানো এমন দুইজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের তিনমাসের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে দায়ীদের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
তিন মাসের বেতন হারানো শিক্ষকরা হলেন, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার আলীপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম এবং যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আহমদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিয়ার রহমান।
মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন জারি হওয়া এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। বিধান ছিল, এসব পদে নিয়োগে মন্ত্রণালয় আলাদা আদেশ জারি করবে। এ পদগুলো নবসৃষ্ট পদ নামে বহুল পরিচিত। এই দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান আদেশ জারির আগেই ২য় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা হিসেবে সে পদগুলোকে শূন্য দেখিয়ে ছিলেন। ফলে, সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। এনটিআরসিএর মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও প্রার্থীদের এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ চাহিদার জন্য। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : শূন্য পদের ভুল তথ্যের ঝামেলা পোহাচ্ছে এনটিআরসিএ
ই-রিকুইজিশনে ভুল তথ্য দিলে প্রতিষ্ঠান প্রধান-কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
শূন্যপদের ভুল তথ্য সংশোধনে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তৎপর হওয়ার পরামর্শ
তাই, আলীপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম এবং আহমদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিয়ার রহমানের তিন মাসের এমপিও কর্তন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। গতকাল ৯ ফেব্রুয়ারি এ নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।
শূন্যপদের ভুল তথ্য দিলে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে এমপিও নীতিমালাতেও। কোন প্রতিষ্ঠান শূন্যপদের ভুল তথ্য দিলে সে পদে সুপারিশ করা প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে হবে। প্যাটার্নের অতিরিক্ত শূন্যপদের চাহিদা দিলে শিক্ষকের শতভাগ বেতন প্রতিষ্ঠান থেকে দিতে হবে। তা না হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও বন্ধ করা হবে। আর কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমপিও নীতিমালায়ও এমনটি বলা হয়েছে।
শূন্যপদের ভুল তথ্যের জন্য এমপিওভুক্ত না পারা কয়েক হাজার প্রার্থীর জটিলতা সমাধান হয়েছে। তবে, এখনো ১ হাজারের বেশি প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। তাই শুধু দুই প্রতিষ্ঠান প্রধান নয়। শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়া সব প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রার্থীরা।
নবসৃষ্ট পদের জটিলতায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. রাসেল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভুল তথ্যের কারণে ১৫ মাসের বেশি সময় আমরা এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। কয়েক হাজার প্রার্থী এ জটিলতায় পড়েছে। অথচ এ জটিলতার জন্য আমরা দায়ি নই। ১৫ মাসের বেতনও পাইনি কিন্তু কাজ করতে হয়েছে। তাই, শুধু দুইজন নয়, যেসব প্রতিষ্ঠান প্রধান ভুল চাহিদা দিয়েছেন তাদের সবার শাস্তি দাবি করছি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।