শিক্ষক নিয়োগের ভুল চাহিদা দেয়া আরও ৮ প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও কর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) দ্বিতীয় চক্রের শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদের ভুল তথ্য দিয়েছিল কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান। ফলে, শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও কয়েক হাজার প্রার্থী যোগদান ও এমপিওভুক্ত হতে জটিলতায় পড়েছিলেন। মহিলা কোটা, নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ, প্যাটার্ন জটিলতাসহ নানা সমস্যায় তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। এসব জটিলতার মূলে ছিলেন শূন্যপদের ভুল তথ্য পাঠানো প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক নিয়োগের ভুল তথ্য পাঠানো এমন আরও ৮ জন প্রতিষ্ঠান প্রধানের তিনমাসের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে দায়ীদের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে।  

এর আগে একই দায়ে মোট ১৫ জন প্রতিষ্ঠান প্রধানের ৩ মাসের এমপিও কেটে রাখার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

এ দফায় তিন মাসের বেতন হারানো শিক্ষকরা হলেন, পিরোজপুর সদর উপজেলার বাইনখালী মোজাহার মল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম, বগুড়ার ধুনট উপজেলার বাশপাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা সুলতানা, কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বকসীগঞ্জ রাজিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মেহেরুজ্জামান, রাজশাহী নগরী মতিহার থানার বালাজান নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক মো. তাজরুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বড়বলদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউসুফ আলী। 

তিন মাসের এমপিও হারানো প্রতিষ্ঠান প্রধানদের মধ্যে আছে, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরাস উদ্দিন, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়দেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুর উদ্দিন এবং টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বরাটি নরদানা বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহরাব আলী মল্লিক।

মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন জারি হওয়া এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। বিধান ছিল, এসব পদে নিয়োগে মন্ত্রণালয় আলাদা আদেশ জারি করবে। এ পদগুলো নবসৃষ্ট পদ নামে বহুল পরিচিত। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধান আদেশ জারির আগেই ২য় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা হিসেবে সে পদগুলোকে শূন্য দেখিয়ে ছিলেন। ফলে, সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। এনটিআরসিএর মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও প্রার্থীদের এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ চাহিদার জন্য। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই, দায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তিন মাসের এমপিও কর্তন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। 

শূন্যপদের ভুল তথ্য দিলে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা আছে এমপিও নীতিমালাতেও। কোন প্রতিষ্ঠান শূন্যপদের ভুল তথ্য দিলে সে পদে সুপারিশ করা প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে হবে। প্যাটার্নের অতিরিক্ত শূন্যপদের চাহিদা দিলে শিক্ষকের শতভাগ বেতন প্রতিষ্ঠান থেকে দিতে হবে। তা না হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও বন্ধ করা হবে। আর কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমপিও নীতিমালায়ও এমনটি বলা হয়েছে।

শূন্যপদের ভুল তথ্যের জন্য এমপিওভুক্ত না পারা কয়েক হাজার প্রার্থীর জটিলতা সমাধান হয়েছে। তবে, এখনো ১ হাজারের বেশি প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। তাই শুধু হাতেগোনা কয়েকজন প্রতিষ্ঠান প্রধান নয়। শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়া সব প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রার্থীরা। 

নবসৃষ্ট পদের জটিলতায় ভুক্তভোগীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভুল তথ্যের কারণে ১৫ মাসের বেশি সময় আমরা এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। কয়েক হাজার প্রার্থী এ জটিলতায় পড়েছে। অথচ এ জটিলতার জন্য আমরা দায়ী নই। ১৫ মাসের বেতনও পাইনি কিন্তু কাজ করতে হয়েছে। তাই, শুধু কয়েকজন নয়, যেসব প্রতিষ্ঠান প্রধান ভুল চাহিদা দিয়েছেন তাদের সবার শাস্তি দাবি করছি।

 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040340423583984