প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের চাঁদাবাজিতে বিব্রত প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের নেতার। শিক্ষক নেতাদের চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি বন্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় শিক্ষক নেতাদের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। একইসাথে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে বেশ কয়েকদফা দাবি জানানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম মানিক ও এম এ ছিদ্দিক মিয়া, গোলাম মোস্তফা, সহ-সভাপতি শেখ মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আছমা খানম, সাবিনা ইয়াসমিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিষদের নেতারা বলেন, বিগত সময়ে সহকারী শিক্ষকদের চলতি দায়িত্বে পদায়ন করায় বিপুল অঙ্কের টাকা শিক্ষক সমিতির কতিপয় নেতা হাতিয়ে নেন। প্যানেল প্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নেওয়ার গুঞ্জন শিক্ষক নেতাদের মুখে মুখে। এখন তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক অভিনব চাঁদাবাজি শুরু করেছে। বিগত সময়ের উপজেলা, জেলা, বিভাগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের ক্রেস্ট ও সনদ প্রদানের নামে চাঁদাবাজি সম্পর্কে ফেসবুকে ঝড় উঠেছে। শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মহাপরিচালক ও সচিরের নাম ভাঙিয়ে শিক্ষক নেতারা নিয়েছেন বলে শিক্ষকদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ প্রাথমিক শিক্ষায় কার্যকর করার লক্ষ্যে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন পরিষদের নেতারা।
সভায় বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের নেতারা বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করে বিশ্ব শিক্ষক দিবস সরকারিভাবে পালনের জন্য জোর দাবি জানান। জাতীয় শিক্ষানীতি- ২০১০ অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার জোর দাবি জানান নেতারা। কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্রুত প্রশিক্ষণ আওতায় আনার দাবি জানান। দ্রুত কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোকে রেজিষ্ট্রেশনের আওতায় এনে শিক্ষকদের অনুদানের দেওয়া দাবিও জানান পরিষদের নেতারা।
নেতারা আরও বলেন, সব মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার সার্ভিস রয়েছে। একমাত্র ক্যাডার সার্ভিস নেই প্রাথমিকের মতো বিশাল জনগোষ্ঠীর মন্ত্রণালয়ে। বক্তারা অবিলম্বে প্রাথমিক শিক্ষায় ক্যাডার সৃষ্টি করার দাবি জানান এবং সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রিপদ হিসেবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পদোন্নতির দাবি জানান। কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিন্ন কর্মঘন্টা ও পাঠ্যবই নিশ্চিত করে শিক্ষক সংকট শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় সভায়।