শিক্ষক লাঞ্ছনা : শিক্ষা ভবনের লিয়াকতকে নোয়াখালীতে বদলি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষা ভবনে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অভিযুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মচারী সৈয়দ লিয়াকতকে নোয়াখালীর একটি সরকারি কলেজে বদলি করা হয়েছে। গত এপ্রিলে ওই শিক্ষককে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিলো সৈয়দ লিয়াকতের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি শুধু দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রকাশিত হয়। ওই সময়ে মহাপরিচালক দেশে ছিলেন না। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষক সংগঠন ওই ঘটনায় লিয়াকতের বিচার দাবি করে বিৃবতি দেয়নি। লিয়াকতের হাতে এমপিওর ফাইল থাকে। প্রায় সব শিক্ষক নেতা বদলি ও  এমপিওর তদবির করতে শিক্ষা ভবনে যান। 

 দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর প্রতিবেদনটি মহাপরিচালকের নজরে আসলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বললেও এতদিন গড়িমসি করছিলো অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা । অবশেষে বৃহস্পতিবার লিয়াকতকে বদলি করে আদেশ জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। 

জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী সৈয়দ লিয়াকতকে নোয়াখালীর সেনবাগ সরকারি কলেজের প্রধান সহকারী হিসেবে বদলি করা হয়েছে। 

গত এপ্রিল মাসে ঘুষ নিয়েও কাজ করে না দেয়ায় প্রতিবাদ জানানোয় শিক্ষা ভবনে সৈয়দ লিয়াকতের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন মো. আমিনুর রহমান নামে একজন শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে গত এপ্রিলে দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘শিক্ষা ভবনে শিক্ষক লাঞ্ছিত’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিলো। কিন্তু ঘটনার দুই মাস পেরুলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তা নিয়ে গত ২৮ জুন দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘শিক্ষাভবনে শিক্ষক লাঞ্ছিত : লিয়াকতের শাস্তি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মহাপরিচালক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ৩০ জুন ওই কর্মচারীকে বদলি করা হলো। 

এদিকে কাগজে কলমে ওই শিক্ষকের ‘সমস্যা সমাধান’ করা হলেও জটিলতা ‘লিয়াকত সিন্ডিকেট’ এখনো পুষে রেখেছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সেই শিক্ষক মো. আমিনুর রহমান। তিনি লিয়াকতসহ সিন্ডিকেটের সব সবার শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। 

সৈয়দ লিয়াকত আলী। ছবি : দৈনিক শিক্ষা

গত ৫ এপ্রিল লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষাশহর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আমিনুর রহমান শিক্ষা ভবনে এসে লাঞ্ছিত হন। সেদিন তিনি বকেয়া ৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা বেতন-ভাতা ছাড় করাতে এসেছিলেন। ঘুষ দিয়েও কাজ না হওয়ায় তিনি গিয়েছিলেন অধিদপ্তরের কর্মচারী সৈয়দ লিয়াকত আলীর কাছে। তাতে বেজায় গোস্বা হয় লিয়াকত। শিক্ষক আমিনুরের ওপর চড়াও হন তিনি। অধিদপ্তরের দোতলায় নিজের কক্ষের ভেতর ও বাইরে ওই শিক্ষককে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে লিয়াকতের বিরুদ্ধে। এ সময় হইচই-চিৎকারে তৃতীয় তলার সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নীচতলায় কর্মরত আনসার সদস্যরাও ছুটে আসেন। তাদের মধ্যস্থতায় রক্ষা পান ওই শিক্ষক। 

জানা গেছে, আমিনুর রহমান ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে অবসরে যান। কিন্তু তার জন্মতারিখ ভুল ছিলো। সঠিক জন্মতারিখ অনুযায়ী ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পরে জন্মতারিখ সংশোধন করার পর তাকে আগের পদে পুর্নবহাল রাখা হয়। তাকে বকেয়া বেতন দেয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু সে টাকা পাঠিয়ে দেয়া হলেও তা তিনি তুলতে পারছেন না। এ নিয়ে লিয়াকত সিন্ডিকেট তার কাছে ঘুষ দাবি করে। অভিযোগ আছে লিয়াকতসহ অধিদপ্তরের একটি সিন্ডিকেট এরকম জটিলতায় পড়া শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়মিত ঘুষ নেন। এ ঘটনার জেরে লিয়াকতকে বদলি করা হলেও শিক্ষক আমিনুর রহমান লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি।

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল    SUBSCRIBE    করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027728080749512