শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত

খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি |

খোকসার সাতপাখিয়া বিহারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বেহাল দশা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ না থাকায় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন। পাঁচ বছর আগে উপজেলার মধ্যে এ বিদ্যালয়ে প্রথম অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা শুরু হয়।

সাতপাখিয়া বিহারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন 

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়টির অবস্থান। প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত একীভূত করার কর্মসূচির অধীনে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হয়। চালু করা হয় নিম্ন মাধ্যমিক শ্রেণি। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত শিক্ষকসহ শ্রেণিকক্ষের সমস্যা প্রকট। চলতি বছরের শুরুর দিকে শিক্ষক বিশ্বজিত চক্রবর্তী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে অন্য স্কুলে বদলি হয়ে গেছেন। শিক্ষিকা মনিকা বিশ্বাস নিজের স্কুলে ফিরে গেছেন আর প্রধান শিক্ষক শ্রীদাম চন্দ্র পাড় অবসরকালীন ছুটিতে চলে গেছেন। ফলে বর্তমান শিক্ষক সংখ্যা আটজনে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ১৯৬৪ সালে নির্মিত চার কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখন অফিস কক্ষসহ ছয়টি কক্ষে ৯টি শ্রেণির ক্লাস চলে। চলতি শিক্ষাবর্ষে শিশু শ্রেণিসহ প্রাথমিক স্তরে ৪৫০ জন ও নিম্ন মাধ্যমিক অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ১৮৬ শিক্ষার্থী রয়েছে। 

অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, নিম্ন মাধ্যমিক শ্রেণি চালু করার সময় থেকেই শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। নিম্ন মাধ্যমিকের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির জন্য কোনো শিক্ষক নেই। বুনিয়াদি প্রশিক্ষণসহ কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক দিয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। অথচ নিম্ন মাধ্যমিক শ্রেণির জন্য কমপক্ষে ৯ জন শিক্ষক প্রয়োজন বলেও তারা জানান। পৃথক কমনরুম না থাকায় ছাত্রীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। 

গত শনিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, দুই কক্ষের ভবনের একটি কক্ষে ৫০ শিশুর ক্লাস চলছিল। পাশের কক্ষটি ফাঁকা, মেঝেতে পুরনো কার্পেট বিছানো। আছে শিক্ষকের টেবিল। শিক্ষিকা দিলরুবা জানালেন, কার্পেটে বিছানো কক্ষে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রদের ক্লাস নেওয়া হয়। জেএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ায় একটি রুম ফাঁকা হয়েছে। তাই তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের এখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদ আল মাসুদ বাইরে থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে নিম্ন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ নানা সমস্যার বিষয়ে স্বীকার করেন। নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ আর তথ্য আদান-প্রদান ছাড়া এ সেকশনের কেউ খোঁজ রাখে না বলেও তিনি জানান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ মুঠোফোনে জানান, শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন হলে বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক স্তরের অধীনে আসবে। এখন স্কুলটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে রয়েছে। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ সাহা স্বীকার করেন বিদ্যালয়টির করুণ অবস্থার কথা। তবে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049757957458496