ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে মেধাই হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম খুবই মেধাবি। তাদের যথাযথভাবে তৈরি করে কাজে লাগাতে পারলে আগামীদিনের বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর অনন্য দৃষ্টান্ত।
মন্ত্রী গতকাল রোববার রাতে ঢাকায় মণিসিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মণিসিংহ ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্টের সভাপতি শেখর দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ওমানের সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. এসএম মুজিবুর রহমান, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মাহবুব জামান, জাতিসংঘের সাবেক উন্নয়ন গবেষনা প্রধান ড. নজরুল ইসলাম, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আবদুন নূর তুষার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সংগীতা আহমেদ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বাংলা ধরিত্রীর প্রধান নির্বাহী দিলওয়ার হোসেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশের বিস্ময়কর রূপান্তর হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। এই রূপান্তর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক নেতৃত্বের ফসল। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড। এটিকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের তরুণরা সামান্য সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশকে তারা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে। এই জন্য প্রয়োজন শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর। প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে তরুণ সমাজকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার দেশে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, আমরা প্রাথমিক শিক্ষাকে ডিজিটাল রূপান্তরের কার্যক্রম শুরু করেছি। উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে ইউজিসিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জোরালো ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্ববান জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রযুক্তিতে শতশত বছর পিছিয়ে থাকা এ দেশটিকে ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ার সাথে সংযুক্ত করতে উদ্যােগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে আইটিইউ, ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ, কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণসহ যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন। এরই মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া ইন্টারনেট বিপ্লব বা তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের ভিত রচিত হয়। অথচ অতীতের দুটি শিল্প বিপ্লবের কোন একটিও এ ভূখন্ডের মানুষ শরীক হতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা ১৯ বছরের শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর রচিত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নসহ যুগান্তকারি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে আজ অগ্রগতির প্রতিটি সূচকে বিস্ময়কর সফলতায় উপনীত করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ ভিশন বাস্তবায়নে কাজ চলছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বাংলাদেশ প্রেক্ষিত বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী। বইটিতে চতুর্থ শিল্প বিষয়ক জনাব মোস্তাফা জব্বারসহ অনেকের লেখা সংকলন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় শেখর দত্ত উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তির শক্তি বেশি করে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আইআইটির বদৌলতে সিলিকন ভেলিসহ ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবনের দুনিয়ায় ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের বিকল্প নেই। তারা আইআইটির আদলে বিআইটি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।