বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাপ্রধানদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বাগেরহাট, সিলেটের গোয়াইনঘাট, বগুড়ার শাজাহানপুর ও পটুয়াখালীতে এ বিক্ষোভ হয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে প্রভাব বিস্তার এবং অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে এসব শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবি ওঠে।
সরকার পতনের পর থেকে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
বাগেরহাট নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মনোয়ারা বেগমের অপসারণসহ ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মনোয়ারা বেগম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন। তাঁরা বলেন, ‘এত দিন আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। তাঁর পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং আমির মিয়া উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক এইচ এম মনিরুজ্জামানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটিতে কয়েক শ শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে রাজনৈতিক কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। গত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন উপজেলার মাদলা চাচাইতারা যুক্ত সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জনা রানী ঘোষ। গোহাইল ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ মোতাহার আলী মুকুল এবং গভর্নিং বডির সভাপতি উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলী ইমাম ইনোকীর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের পুকুর লিজ দেওয়া টাকার অনিয়ম, সরকারি বরাদ্দে মাঠ সংস্কারে অনিয়ম, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানপ্রধানের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করতে দেখা গেছে, উপজেলার ডেমাজানী সরকারি কমর উদ্দিন কলেজ, নিশ্চিন্তপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে।
পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল মালেকের পদত্যাগ দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে ওই শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজের প্রভাষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একাদশ শ্রেণির কৃষিশিক্ষা ক্লাসে ছাত্রীদের মানবিক বিকাশ ও জড়তা দূর করার জন্য ওদের দিয়ে গানের আয়োজন করি। এমন সময় উপাধ্যক্ষ স্যার ক্লাসে ঢুকে ছাত্রীদের গানে বাধা দেন এবং বলেন আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। তাই এই দিনে গান গাওয়া যাবে না। এ কোনো রাজনৈতিক গান নয় উল্লেখ করে আমি প্রতিবাদ করায় আমার সঙ্গেও অশালীন ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি। কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে ক্লাসরুমে ঢুকে একজন শিক্ষকের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না তিনি। পরে উপাধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে অর্ধশতাধিক ছাত্রী স্বাক্ষরিত অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি দেয়।’