সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে ডাকযোগে একটি সন্দেহজনক পার্সেল আসে ঢাকায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও কেউ পার্সেল গ্রহণ করতে না আসায় সন্দেহ দেখা দেয়। বিষয়টি নারকোটিক্সকে জানায় ডাক বিভাগ। পরে পার্সেল খুলে ২৫টি এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডাইথ্যালামাইড) ব্লটার পায় নারকোটিক্স।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাড্ডার জনৈক ফারদিনের নামে পাঠানো পার্সেলটির মালিক ধরতে গুলশান পোস্ট অফিসের আশপাশে অপেক্ষায় থাকে নারকোটিক্স টিম। একপর্যায়ে ১৫ মে পার্সেল নিতে আসেন আজরাফ আহমেদ ওরফে ওজি। আটকের পর তিনি নিজেকে ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের ছেলে বলে পরিচয় দেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তার বন্ধু ফারদিন পার্সেলটির মালিক। সে তাকে পার্সেল ডেলিভারি নিতে পোস্ট অফিসে পাঠায়। এর ভেতরে কী আছে, তা তিনি জানেন না। একপর্যায়ে কৌশলে ফারদিনকেও পোস্ট অফিসের সামনে ডেকে আনা হয়। নারকোটিক্সের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ফারদিন তার সহযোগী হিসাবে ইব্রাহিম কিবরিয়া নামের এক যুবকের নাম বলেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে থেকে ইব্রাহিমকেও আটক করে নারকোটিক্স।
নারকোটিক্সের গোয়েন্দা টিমের এক সদস্য বলেন, আসামিদের সঙ্গে নিয়ে মাদকের চালান উদ্ধারে অভিযানের উদ্যোগ নেওয়া হলে ইব্রাহিম জানান তার দুলাভাই একজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মরত। স্পর্শকাতর বিবেচনায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। সবকিছু শুনে নারকোটিক্সের উচ্চপর্যায় থেকে অভিযান অব্যাহত রাখতে বলা হয়। থাই মাদক হিসাবে পরিচিত এমডিএমএ (মেথাইলিন ডক্সি মেথা এমফিটামিন) উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অভিযান শেষে উচ্চপর্যায়ে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ জানানো হলে গ্রেফতার তিন আসামিকে সেগুনবাগিচায় নারকোটিক্সের প্রধান কার্যালয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। রাতে সেখানেই আসামিদের রাখা হয়। কিন্তু পরদিন ১৬ মে ভোর থেকে অভিযানসংশ্লিষ্টরা চাপের মুখে পড়েন। আসামি ছাড়িয়ে নিতে ব্যাপক তদবির শুরু হয়। দফায় দফায় ফোন করেন কয়েকজন প্রভাবশালী। এতে নারকোটিক্সের পদস্থ কর্মকর্তাদের অনেকেই ভিন্ন আচরণ শুরু করেন। মামলাসহ আইনি প্রক্রিয়া নিতে সংশ্লিষ্টদের বিরত থাকতে বলা হয়।
এলএসডি চোরাচালানের অভিযোগে মঙ্গলবার পল্টন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন নারকোটিক্সের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান (মামলা নম্বর ৩৬)।