দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) : কুমারখালীতে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে বয়স ও নামের আংশিক পরিবর্তন করে জাল সনদ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোনায়েম খানকে শোকজ করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।
লিখিত অভিযোগ ও শোকজ নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে দুলু নামের এক শিক্ষার্থী ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। পরে চাকরির প্রয়োজনে তাঁর একটি সার্টিফিকেটের দরকার হলে তিনি প্রধান শিক্ষক মো. মোনায়েম খানের কাছে যান। সে সময় প্রধান শিক্ষক ৫২ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে বয়স ও নামের আংশিক পরিবর্তন করে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে দুলুকে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ দেখিয়ে একটি সার্টিফিকেট তৈরি করে দেন। সার্টিফিকেটটি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি ইস্যু করা হয়। তবে জাল সার্টিফিকেটটি দুলুর প্রয়োজন মেটাতে ব্যর্থ হলে সম্প্রতি তিনি প্রধান শিক্ষককে অর্থ ফেরত দিতে বলেন। প্রধান শিক্ষক অর্থ ফেরত না দেয়ায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতির কাছে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেন সভাপতি মো. ফজলুর রহমান।
অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাষ্য, তিনি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে জেএসসির ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করেন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে একটি চাকরির প্রয়োজনে অষ্টম শ্রেণি পাসের সার্টিফিকেট দরকার হলে তিনি মোনায়েম খানের কাছে যান। সার্টিফিকেট প্রদানের বিনিময়ে প্রধান শিক্ষক প্রথমে এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে দরকষাকষি করে ৫২ হাজার টাকা দিয়ে তিনি অষ্টম শ্রেণি পাসের একটি সার্টিফিকেট নেন। বর্তমানে জাল সার্টিফিকেটটি তাঁর কোনো কাজে লাগছে না। সে জন্য টাকা ফেরত চেয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে বুজরুক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোনায়েম খানের ব্যক্তিগত নম্বরে কল দেয়া হলে তিনি জানান, ব্যক্তিগত কাজে তিনি বাইরে আছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে গত মঙ্গলবার শোকজ করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে নোটিশের উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।