শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নে প্রধান শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে যৌনপীড়ন মামলায় বরখাস্ত এক শিক্ষক নিয়মিত আসছেন বিদ্যালয়ে। আইন অমান্য করেই চালিয়ে যাচ্ছেন উপবৃত্তি, মাসিক রিটার্নসহ কার্যালয়ের নানা কার্যক্রম। 

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে মাসিক রিটার্ন তৈরির কাজে আসেন ওই শিক্ষক। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের মাঠে ভিড় জমাতে থাকেন। লোকজন দেখে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষককে দাবড়ে ধরে বিদ্যালয়ের কক্ষে আটক করে পুলিশ ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের খবর দেন।

 

পরে খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা উপস্থিত ছিলেন।

বরখাস্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. আব্দুল হালিম (৪০)। তিনি উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং কয়া ইউনিয়নের খলিশাদহ গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।

পুলিশ, শিক্ষা কার্যালয় ও মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, টিসি দেওয়ার ভয় দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক একাধিকবার মেয়েকে যৌনপীড়ন করেছেন। সর্বশেষ গত ২৩ আগষ্ট দুপুরে বিদ্যালয়ের স্টোর কক্ষে নিয়ে ওই মেয়ের শ্লীলতাহানী করে। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কুমারখালী থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। 

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গত ২০ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করায় বিভাগীয় উপ পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগ কর্তৃক প্রধানকে ২০ সেপ্টেম্বর হতে সাময়িক বরখাস্ত করেন। যতদিন মামলা চলমান থাকবে, ততদিন ওই শিক্ষক বরখাস্ত থাকবেন। বিদ্যালয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। বরখাস্তের এই সময়টুকু তিনি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে হাজিরা দিবেন। তার মূল বেতনের অর্ধেক ও টিফিন ভাতার সম্পূর্ণ অংশ কর্তন করা হয়েছে। বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা পূর্ণাঙ্গ পাবেন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিক্ষাভাতা পাবেন।  

এবিষয়ে স্থানীয় মহিদুল ইসলাম বলেন, হেড মাস্টারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। বরখাস্ত হয়েও বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতেছেন। আজ আমরা আটক করে রেখেছি। এর একটা বিচার হওয়া দরকার।

এবিষয়ে অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, স্যাররা অফিসের কাজ বুঝতে পারছিলোনা। তাই সহযোগীতা করার জন্য বিদ্যালয়ে এসেছি। লোকজন ঝামেলা করতেছে। আমার ভুল হয়েছে। আমি মাফ চাচ্ছি।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. জিন্নাত আরা বলেন, প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত রয়েছেন। উপজেলা অফিসে হাজিরা দিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালেও হাজিরা দিয়েছেন। কাউকে না জানিয়েই তিনি বিদ্যালয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়ে যেতে পারবেন না, কোনো কাজও করতে পারবেন না। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোহসীন হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষককে উদ্ধার করে থানা আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে বিস্তারিত বলা যাবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026600360870361