শিক্ষার্থীদের অন্দোলনের মুখে ভিসি নাসিরের ভাতিজার পদত্যাগ

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি |

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের চেয়ারম্যান থেকে খোন্দকার মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগ করেছেন।  রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে তিনি রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. নূরউদ্দিন আহমেদের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। এর আগে রোববার সকাল থেকে চেয়ারম্যান খন্দকার মাহমুদ পারভেজের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আগের ভিসি নাসিরউদ্দিনের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে স্বৈরাচারী আচরণ এবং অনৈতিকভাবে তাদের ক্যারিয়ার ধ্বংসের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে  ক্লাস বর্জন করে বিভাগের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

বিদায়ী ভিসি নাসির বিরোধী অন্দোলনের সময় অবৈধ নিয়োগের অভিযোগে খোন্দকার মাহমুদ পারভেজের নাম আলোচনায় আসে। ভিসি নাসির পদত্যাগের পর সম্প্রতি ৩৫জন শিক্ষার্থীকে ইচ্ছাকৃতভাবে শূন্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
  
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইআর বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার মাহমুদ পারভেজ পদত্যাগ করেছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। 

এরআগে, দুপুরে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তার চেয়ারম্যান ও শিক্ষকতা পদ থেকে অপসারণের দাবিতে রেজিস্ট্রারের কাছে অনাস্থাপত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা। অনাস্থাপত্রে শিক্ষার্থীরা জানান, অযোগ্যতার সত্ত্বেও খন্দকার মাহমুদ পারভেজ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতার প্রয়োজন সেগুলোর একটিও তার নেই। তিনি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। পরে তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং এক পর্যায়ে তাকে আইআর বিভাগের চেয়ারম্যানও করা হয়।

প্রথম থেকেই তিনি ক্লাসে পাঠদানে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। তাই তিনি যেসব কোর্স নিয়েছেন সে বিষয়ে আমরা সম্পূর্ণ ধারণা পাইনি। এছাড়াও তিনি প্রতিটি কোর্স ৭-৮টি ক্লাস নিয়েই শেষ করেছেন। এ বিষয়ে প্রথমে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও তার চাচা সদ্য পদত্যাগী ভিসি প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিনের ক্ষমতাবলে অভিযোগকারীদের বহিষ্কার ও একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি দিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য করেন।

আরও পড়ুন: এবার ভিসির ভাতিজার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা

তিনি তৃতীয় ব্যাচের ৩৫ জন শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্টে সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া শূন্য নম্বর দেন। এছাড়া দ্বিতীয় ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শূন্য নম্বর দিলে তারা তাদের ভুল জানতে চাইলে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দেন।

তিনি দরিদ্র তহবিল থেকে সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে চেকের পরিবর্তে ডকুমেন্ট ছাড়া নিজের ইচ্ছামতো টাকা দেওয়ায় তার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া অনেক দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থী আর্থিক সাহায্যের জন্য তার দ্বারস্থ হলে তাদের টাকা না দিয়ে তিনি অপদস্থ করেছেন। 

ওই শিক্ষককে ক্লাসে পাঠদান বিষয়ক প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর না দিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন এবং প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, তুই এসে পড়, জানালা দিয়ে ফেলায় দেব, কান ধরে ভিসি সাহেবের কাছে নিয়ে যাবো এবং তিনি বহিষ্কার করবেন। 

এছাড়া শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের অফিস সহকারীর মাধ্যমে বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যা ছাত্রীদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002856969833374