ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে ১৮ নভেম্বর রাস্তা গত বন্ধ করে দেন। ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেন। ট্রেনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। তাতে শিশু ও নারীসহ বহু মানুষ আহত হন। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে, তিতুমীর কলেজকে কেন বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে হবে, বাংলাদেশে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক কম? আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশকে কি দিচেছ? আমাদের কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর না করাই কি শিক্ষার বড় সমস্যা? কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর সাথে সাধারণ মানুষের, রিকশা, বাসযাত্রী ও ট্রেনের যাত্রীদেও হেনস্তা করা, রক্তাক্ত করার মধ্যে কি সম্পর্ক রয়েছে?
একটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা বা দেশে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সেই সিদ্ধান্ত কি শিক্ষার্থীরা নেবেন, নাকি পলিসি মেকাররা নেবেন? কিছু শিক্ষার্থীরা এ ধরনের দাবি করতেই পারেন, কিন্তু দাবি আদায়ের পথ কি ওই একটাই, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা আর কষ্ট দেয়া?
শিক্ষার্থীদের যদি কোনো কারণে আন্দোলন করতেই হয় সেটি হতে হবে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, অত্যন্ত যুক্তিসংগত। তারা কোনো বিষযে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে পারেন, জনগনণের মতামত নিতে পারেন। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার চালাতে পারেন, কেন তারা সেটি চাইছেন। তারপর সড়কের পাশে, প্রেস ক্লাবের সামনে তাদের দাবির কথা জানাতে পারেন। পরে, শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যেতে পারেন। এভাবে সবকিছু নিয়মতান্ত্রিক হতে হবে। কিন্তু কোনভাবেই তাদের দাবি দাওয়া আদায়ের কর্মসূচিতে যাতে সাধারণ মানুষে কষ্টের কারণ না হয়। আমাদের উচচতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যত তাড়াতাড়ি বিষয়গুলো বুঝবেন দেশের জন্য ততই মঙ্গল।
লেখক: ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষক