শিক্ষার্থীদের নতুন বছরের প্রত্যাশা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সময়ের মতো মিশে যায় মানুষের স্মৃতি-বিস্মৃতির বহমান ধারা। দিন আসে দিন যায়, তেমনি বছরও। এভাবেই রাত ও দিনের পালা বদলে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে আরেকটি বছর। ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে মুছে গেছে আরও একটি বছর। বিদায়ী বছরের প্রতিটি মিনিট শিক্ষার্থীদের কাছে কোন না কোন কারণে স্মরণীয় ছিল। নতুন বছর মানে নতুন ভাবনা। নতুন বছর নানা শ্রেণীর মানুষ ভাবছেন নানাভাবে, শিক্ষার্থীরাও এর বাইরে নয়। কেমন কাটবে ২০২০ সালটি? শিক্ষার্থীরা ভাবছেন ২০১৯ এর ভুল-ত্রুটিগুলোকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা। নতুন বছরের ভাবনা নিয়ে কথা হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। রোববার (৫ জানুয়ারি) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানা যায়। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন তাসনিমুল হাসান প্রান্ত। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত-

২০২০ সালে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবার আগে আমাদের পুঁজিবাদী চিন্তাধারাকে দমন করতে হবে। যেখানে সবাই ভোগবিলাসের পেছনে ছুটবে না। নারী হবে না ভোগ্যবস্তু। আমরা শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে দেশের সর্বাঙ্গীণ সমৃদ্ধি দেখতে চাই যেখানে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি উপরিকাঠামোগত উন্নয়নও সাধিত হবে। উন্নয়নের সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধের সমন্বয় থাকবে। প্রকৃত অর্থে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। নারীরা সুরক্ষিত থাকবে। শিক্ষা ব্যবস্থা সুষ্ঠু হবে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে না। উচ্চতর গবেষণার পথ উন্মোচিত হবে।

মৌমিতা সরকার : শিক্ষার্থী, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ব্যক্তি স্বার্থ,দলীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে দেশের স্বার্থে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বছরে পদার্পণ করুক বাংলাদেশ, প্রতিযোগিতা হোক সফলতার, বিনাশ হোক সকল অপশক্তির, বিশ্বের বুকে চির বিস্ময়ের দেশ হোক আমার প্রিয় জন্মভূমি। ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে সফলতার বার্তা বয়ে আনুক নতুন বছর।

মো. নাহিদ তমাল রোমান : শিক্ষার্থী, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জীবনের আরেকটা অধ্যায় পার হয়ে গেল ২০১৯ এর সঙ্গে। বছরটি জুড়ে ছিল হাসি-কান্না সফলতা ব্যর্থতার এক অনন্য সংমিশ্রণ। নানা ধরনের নতুন নতুন অভিজ্ঞতা জীবনে আরও নতুন ধারা দিয়েছে। যাই হোক, নতুন বছরটা আরও প্রানবন্ত আর সফল হোক এই কামনা করি।

জয়নব খানম : শিক্ষার্থী, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

২০১৯ সালের সময়গুলো অনেক ভাল কেটেছে। বছরের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল রঙে-রাঙা। কিছু চড়াই-উতরাইও ছিল। ক্লাস, পড়াশোনা আর পরীক্ষা সবকিছুর মাঝে আনন্দ ছিল। সময় পেলেই ক্যাম্পাসে বন্ধুরা মিলে গান-গল্প আর আড্ডার আসর বসাতাম। ঠিক এভাবে তিনটি বছর পার করলাম। আর মাত্র দুইটি সেমিস্টার রয়েছে। ২০২০তে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করব। এখন ক্যাম্পাসটিকে আরও বেশি আপন মনে হয়। নতুন বছর নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ও প্ল্যান রয়েছে। যেহেতু অনার্স শেষ হবে ২০২০ সালে তাই ক্যারিয়ারটাকে কীভাবে সুন্দর করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পেছনের ভুল-ত্রুটির কথা চিন্তা না করে নতুন উদ্যোগে এগিয়ে যাব সামনের দিকে।

আশরাফুল ইসলাম শুভ : শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিটা বছরই শেষ হয় নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন শিক্ষা, নতুন ভুল ও নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার মাধ্যমে। ২০১৯ বছরটাও ছিল আমার জন্য অসংখ্য নতুন অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ, এ বছর আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। নতুন ক্যাম্পাস, নতুন বন্ধুবান্ধব,নতুন পরিবেশ সব মিলিয়ে ভালই ছিল ২০১৯। নতুন বছর নিয়ে আমার অনেক পরিকল্পনা। নিজের জীবনকে নতুন করে সাজানো ও গত বছরের ভুল-ত্রুটি গুলো যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেটা নিশ্চিত করব। আর চেষ্টা করব ২০১৯ এ যে ভুলগুলো হয়েছিল সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়।

রিফাত আহম্মেদ : শিক্ষার্থী, ফিশারিজ এ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও পরস্পরে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করার মাধ্যমে সম্ভাবনাময় দেশ গড়ার মূলমন্ত্রের জাগ্রত হবে দেশ। বেকার যুবকরা খুঁজে পাবে কর্মসংস্থান। শ্রমজীবী মানুষ পাবে তাদের শ্রমের ন্যায্যমূল্য। ছাত্রছাত্রীরা পাবে তাদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। ধর্মীয় গোঁড়ামি ও কুসংস্কারমুক্ত একটি দেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। কারণ, ধর্ম যার যার দেশটা সবার। জঙ্গীবাদের থাবা থেকে মুক্তি পেতে তরুণদেরই কাজ করে যেতে হবে। ধর্মকে পুঁজি করে যারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, ধর্মের নামে যারা সন্ত্রাসী কর্মকা- করছে তাদের মূলোৎপাটন হবে এই প্রত্যাশায় সবাইকে নতুন বছরের শুভ কামনা।

মাহিদুল ইসলাম অদি : আইন বিভাগ, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়

যে কোন মূল্যে আমরা সুন্দর একটা আগামী চাই। সুন্দর আগামী মানেই আমাদের ভালভাবে বাঁচা। আর ভালভাবে বাঁচতে পারা মানেই একে অপরের জন্য কিছু করতে পারা। আর আমরা যখন একে অপরের জন্য কিছু করতে পারব, তখন এমনিতেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা নতুন করে পথ চলতে পারব। নতুন স্বপ্নের কথা বলতে পারব। সব ধরনের প্রতিকূলতা মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে পারব সামনে।

তারিক জামান জয় : শিক্ষার্থী, কৃষি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্পে উন্নত হচ্ছে কিন্তু দূষণের পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেই দেশ সত্যিকারের উন্নতি লাভ করে না। সেই সঙ্গে দরকার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রথমে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য দরকার দেশের প্রতি ভালবাসা আর একটু সচেতনতা। পরিচ্ছন্নতার বাণী ছড়িয়ে দিতে শিক্ষার্থীদের পদক্ষেপ হোক অগ্রগামী। নতুন বছরে পরিবর্তন আসবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

আনিকা তাবাসসুম ইতু : শিক্ষার্থী, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046789646148682