শিক্ষার্থীদের প্রকাশনা সংস্থার পাঠ্যসূচি পড়ানোর অভিযোগ

বরগুনা প্রতিনিধি |

বরগুনার বামনা সরকারি সারওয়ারজান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডের পাঠ্যসূচি বাদ দিয়ে একটি প্রকাশনা সংস্থার দেওয়া পাঠ্যসূচি পড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ ওই প্রকাশনা সংস্থার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা উেকাচ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তিনি ওই প্রকাশনীর গাইড বই পড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে বামনা সরকারি সারওয়ারজান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে শিক্ষক হারুন অর রশিদের পরামর্শ দেওয়া পাঠ্যসূচি উপজেলা শহরের মুক্তা ডিজিটাল থেকে ৩০ টাকার বিনিময়ে কিনে নিচ্ছে।

বামনা সদরের মুক্তা ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক আলমাস হোসেন বলেন, ‘হারুন স্যার তাঁকে এগুলো সাজেশন বই আকারে ফটোকপি করতে বলেছেন। আমি ফটোকপি খরচ হিসেবে ৩০ টাকা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিচ্ছি। এর বাইরে আর কিছুই জানি না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বামনা সরকারি সারওয়ারজান মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানায়, সহকারী প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ সংশ্লিষ্ট গাইড বই প্রকাশনা সংস্থার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন। তিনি বোর্ডের পাঠ্যসূচি উপেক্ষা করে প্রকাশনা সংস্থার পাঠ্যসূচি পড়াতে বাধ্য করছেন শিক্ষার্থীদের।

তারা আরো জানায়, সহকারী প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ প্রকাশনা সংস্থাটির প্রেস থেকে বিনা মূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপান। অথচ প্রতি পরীক্ষা শেষে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ওই প্রশ্নপত্র ছাপানোর খরচ তুলে নেন।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তার হিরা জানায়, সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যার তাদের সবাইকে বাইরের সাজেশন কিনতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই স্যারের কথামতো সাজেশন কিনেছে তারা।

সরকারি বামনা সারওয়ারজান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাররফ হোসেন জানান, বোর্ডের পাঠ্যসূচি উপেক্ষা করে কেন বাইরের প্রকাশনা সংস্থার পাঠ্যসূচি পড়ানো হবে—এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। উত্তরে সহকারী প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমি যত দিন এ বিদ্যালয়ে আছি, আমার ইচ্ছামতো বিদ্যালয় চলবে।’

বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য চৌধুরী কামরুজ্জামান সগির বলেন, ‘আমরা যত দিন বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম, তত দিন এখানে কোনো অনিয়ম হতে দিইনি। সহকারী প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ এর আগেও এ ধরনের অনেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’

এ ব্যাপারে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শিউলী হরি বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি। ছুটি শেষে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বরিশাল বিভাগের চেয়ারমান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, ‘গাইড বই কম্পানির কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে বোর্ডের পাঠ্যসূচি উপেক্ষা করা জঘন্য অপরাধ। আমি তদন্ত করে এ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023140907287598