শিক্ষার্থীদের ‘মেস ভাড়া কমানো’ বিষয়ে জাবি ভিসির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ছাত্র ফ্রন্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষার্থীদের ‘মেস ভাড়া কমানো’ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের কাছে উপাচার্যকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন সংগঠনের নেতারা।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন,  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো আবাসিক হল নেই।  শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে মেসে থাকতে বাধ্য হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এই শিক্ষার্থীরা আরও বিপাকে পড়েছে। তাই তারা মেসের ভাড়া পরিশোধ করছে পারছে না। অন্যদিকে মেস মালিকরা ভাড়া পরিশোধের জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে এবং তারা উপাচার্য ড. মিজানুর রহমানের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। কিন্তু উপাচার্য অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা তো করলেনই না, উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে মিডিয়াকে বলেন, “আমি মনে হয় সব থেকে গরিবের বাচ্চাদের নিয়ে এসে ভর্তি করেছি। তোমরা এত  মিসকিন, নিজেদের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত নেই। আমি কী  বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম যে, দরিদ্রদের ভর্তি করা হয়। এটা কি দরিদ্রদের এতিমখানা, মাদ্রাসা? তোমাদের বিয়ে হবে না। বিয়ে করতে গেলে বলবে, গরিবের বাচ্চা সব তোমরা।”

তিনি আরও বলেন, “খাওয়ার টাকা লাগছে না, কেএফসি যাওয়া লাগছে না, মোটরসাইকেলের খরচ লাগছে না, বিড়ি-সিগারেট লাগছে না, রিকশা ভাড়া লাগছে না, বান্ধবীরে আইস্ক্রিম খাওয়ানো লাগতেছে না। এসব টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছ না কেন?”

নেতারা আরও বলেন , একজন উপাচার্য  কতটুকু দায়-দায়িত্বহীন হলে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে এ রকম উক্তি করতে পারেন ইতিহাসে এমন নজির খুব কমই আছে! পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের দেয়া ট্যাক্সের টাকায় এর ব্যয় নির্বাহ হয়।  জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের শিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থান সম্পর্কে তার মন্তব্য অযৌক্তিক ও চরম বৈষম্যমূলক।
 
ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বলেন, আবাসন ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম দাবি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমনিতেই আবাসনের অধিকার থেকে বঞ্চিত। করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়ে তিনি ‘মেস ভাড়া কমানো’ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিলেন না, রাষ্ট্রের কাছে দাবি করলেন না। উল্টো অসহায় শিক্ষার্থীদের অপমান করলেন।

বিবৃতিতে উপাচার্য ড. মিজানুর রহমানকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মেস ভাড়া মওকুফে রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহন করার আহ্বান জানান ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌন হয়রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির - dainik shiksha অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি - dainik shiksha যৌ*ন হয়*রানি: ঢাবি শিক্ষক নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027430057525635