শিক্ষার্থীবান্ধব সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা, তবে...

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘবে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার দাবি অনেকের এবং অনেক দিনের। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে কতটা শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত, সে প্রশ্ন সবার আগে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, আমার মতে, এটি শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত কেন না, বর্তমানে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪২টি। এখন একজন শিক্ষার্থী যদি ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে চায় তাহলে তার খরচ কেমন হতে পারে? যদি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফরমের দাম ন্যূনতম ৫০০ টাকা হয় তাহলে ফরম বাবদ খরচ দাঁড়ায় (৫০০x২০) ১০০০০টাকা। এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক নানা রকম খরচ তো রয়েছেই। যেমন—ফরম প্রিন্ট করা, ফরম জমা দেওয়া, ব্যাংক ড্রাফট করা ইত্যাদি। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এটি বিশাল একটা বোঝা। তার মধ্যে চলে বাণিজ্য। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি ফরমের মূল্য ১৫০০ টাকাও নির্ধারণ করতে দেখা গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পর দিন অন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে থাকে। একটি পরীক্ষা দিয়ে অন্য পরীক্ষার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে একই দিন দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েও পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়তে হয় ভর্তিচ্ছুদের। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি প্রক্রিয়া আলাদা হওয়ায় কোচিং সেন্টারগুলোও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। আর শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে বিপাকে পড়েন তাদের অভিভাবকরা।

এ সকল ঝামেলা ও দুর্ভোগ কমাতে এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমিও একমত। তবে আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করি। যেমন—বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরন অনুযায়ী আলাদা পরীক্ষা নেওয়া। অর্থাত্ সাধারণ, বিজ্ঞান, মেডিক্যাল, কৃষি ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে আলাদা আলাদা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া। যেমনটি গত ২০১৯-২০ সেশনে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে। তাছাড়াও যাতে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ঝরে না পড়ে সে জন্য দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। কেন না সাময়িক কোনো সমস্যার কারণে যদি পরীক্ষা দিতে না পারে বা অন্য কোনো কারণে যদি স্বপ্নের ক্যাম্পাসে যদি জায়গা করে নিতে না পারে তাহলে সে মেধাবী শিক্ষার্থী ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে যেতে পারে। মেধাবীদের মূল্যায়নে তাই দ্বিতীয় সুযোগটি কাম্য। প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যেতে পারে তার জন্য কর্তৃপক্ষকে তীক্ষদৃষ্টি এবং শতভাগ নিরাপদের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেওয়ার জন্য নয় বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়িত হোক। সকল আলোচনা-সমালোচনা গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সিদ্ধান্তটি শতভাগ শিক্ষার্থীবান্ধব করবে— এমনটি প্রত্যাশা।

লেখক : আমজাদ হোসেন হৃদয়, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029230117797852