একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে এবার মোট আসন ২৬ লাখ চার হাজার ৮৫৬। আর সবগুলো বোর্ডে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছেন ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন। এ হিসেবে সাড়ে নয় লাখেরও বেশি আসন ফাঁকা থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে মানসম্পন্ন কলেজগুলোতে আসন পেতে এসএসসি ও সমমানে পাওয়া নম্বরের প্রতিযোগিতা হলেও অনেক কলেজ ও মাদরাসার কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী না পাওয়ার শঙ্কা প্রকট হয়ে উঠেছে। গতবারের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও এবার অনেক ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন অনেক ভর্তিচ্ছুক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী না পেলে কলেজগুলোকে এমপিও হারাতে হতে পারে। যদিও শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হবে না। এমপিও হারানো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষকদের পাশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করার চিন্তাভাবনা করছে শিক্ষা প্রশাসন।
এমন পরিস্থিতিতে মানহীন কলেজগুলো নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে শিক্ষার্থীদের অনুমতি ছাড়াই তাদের হয়ে আবেদন করে দিতে পারে বলে শঙ্কা জেগেছে। ইতিমধ্যে নরসিংদীর একটি মাদরাসার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের জালিয়াতির প্রমাণ পেলে দায়ী কলেজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলোর মোর্চা আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। এ ক্ষেত্রে এমন প্রতিষ্ঠানের ভর্তির প্যানেল বন্ধ করে দেয়া হবে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে একাদশে ভর্তির প্রথম ধাপের আবেদন শুরু হয়েছে। ২০ আগস্ট পর্যন্ত এই ধাপের প্রক্রিয়া চলবে। এবার একাদশে ভর্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন হবে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে। কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে কলেজ ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
ভর্তি তদারকির দায়িত্বে থাকা ঢাকা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার একাদশে ভর্তির জন্য ঢাকা বোর্ডের কলেজগুলোতে ৫ লাখ ৩৯ হাজার আসন আছে। এছাড়া বরিশাল বোর্ডের কলেজগুলোতে ১ লাখ ৬০ হাজার, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১ লাখ ৭৪ হাজার, কুমিল্লা বোর্ডে ২ লাখ ৪১ হাজার, দিনাজপুর বোর্ডে ৩ লাখ ২০ হাজার, যশোর বোর্ডে ২ লাখ ১৭ হাজার, ময়মনসিংহ বোর্ডে ১ লাখ ২৭ হাজার ও সিলেট বোর্ডের কলেজগুলোতে ১ লাখ ৩৬ হাজার আসন আছে। আর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম একাদশ শ্রেণিতে বিভিন্ন মাদরাসায় আসন আছে প্রায় ৩ লাখ ৮ হাজার। সারা দেশে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান এবার উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এবার অনেক কলেজ কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার্থী পাবে না। মফস্বলের কলেজগুলোর ক্ষেত্রে এমনটা হবে। কোনো কোনো কলেজে হয়তো দেড়শ আসন থাকলে শিক্ষার্থী পাবে ৯-১০ জন।
অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এও বলেন, শহরের যে কলেজগুলো একটু ভালো মানের বলে পরিচিত সে কলেজগুলো শিক্ষার্থীদের পছন্দ তালিকায় প্রথম দিকে থাকে। তাই সে কলেজগুলোতে একটু প্রতিযোগিতা (এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের) হতে পারে।
এদিকে প্রতি বছরই নামধারী কিছু কলেজের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের না জানিয়ে তাদের পক্ষে আবেদন করে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা কাঙিক্ষত কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমের প্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলেজের ভর্তির প্যানেল বন্ধ করে দেয়া হবে। আর কোনো শিক্ষার্থীর নামে অন্য কেউ আবেদন করে দিলে তাকে বোর্ডে যোগাযোগের পরামর্শ দেবো। কেউ যোগাযোগ করলে তাকে না জানিয়ে করা আবেদন বাতিল করে দেয়া হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠান কয়েকবছর ধরে এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য শিক্ষার্থী না পায় তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল করার। তবে, শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হবে না। তাদের আমরা পাশের কাম্য শিক্ষার্থী থাকা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্জ (সমন্বয়) করবো।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।