শিক্ষক ঘাটতি নজিরবিহীনশিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষণ-পরিবেশ ও শিক্ষার মানের গড় নির্দেশক। এর সাহায্যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা অর্জন করা যায়। যেমন—শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত পাঠ-পরিসর পায় কি না, পাঠ্য বিষয়ে (বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে) আলোচনার পর্যাপ্ত সময় পায় কি না, কোনো ক্লাসের সব শিক্ষার্থী ক্লাসে বসার জায়গা পায় কি না, ক্লাসসূচি যথাযথভাবে মেনে চলা সম্ভব হয় কি না প্রভৃতি।

এ অনুপাতে পাঠ-পরিবেশই বেশি গুরুত্ব পায়; পাঠের মানের কথা পরোক্ষভাবে উল্লিখিত। পরিবেশ যথাযথ হলে পাঠের তথা শিক্ষার মান ভালো হওয়ার কথা। শুক্রবার (১৭ মে) দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকা দরকার। অর্থাৎ আদর্শ ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত হচ্ছে ৩০ঃ১। বেশির ভাগ উন্নত দেশেই এ অনুপাত বজায় রাখা হয়। কোনো কোনো উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশেও এ অনুপাত দেখতে পাওয়া যায়।

তবে বেশির ভাগ স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে অনুপাতটি ৫০ঃ১-এর নিচে নয়। বাংলাদেশে এ অনুপাত স্বস্তিকর ধারণা দেয় না। দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৭০ঃ১, অর্থাৎ প্রতি ৭০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। বাস্তবে কিছু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত দেখে চোখ কপালে উঠে যায়। কালের কণ্ঠ’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজে ৫৬ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন প্রায় ২০০ জন।

অনুপাত ২৮০ঃ১। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত। প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠ-পরিসর কত সংকুচিত, তা সহজেই অনুমেয়। শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় কোনো কোনো বিষয়ের একই বর্ষের শিক্ষার্থীদের দুই ভাগ করে ক্লাস নিতে হয়। কারণ একসঙ্গে থাকলে অর্ধসংখ্যক শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেই পাঠ নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের দুই ভাগ করলে সমস্যা কিছুটা কমে বটে, তবে একজন শিক্ষককে ডাবল ক্লাস নিতে হয়।

তাঁর পক্ষে পর্যাপ্ত মনোযোগ দিয়ে পাঠদান করা কঠিনই বটে। এমন গাদাগাদি অবস্থা দেশের অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে। শুধু ক্লাসেই নয়, শিক্ষকদের বসার কক্ষেও একই অবস্থা। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে শিক্ষার মান ভালো হবে কী করে?

শিক্ষার পরিবেশ, পাঠ-পরিসর উন্নত করতে হলে, শিক্ষার মান বাড়াতে হলে এ দশা থেকে বেরিয়ে আসা অত্যাবশ্যক। ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের জন্যই পরিসর বাড়াতে হবে, যাতে স্বস্তিতে পাঠ দান ও পাঠ গ্রহণ করা যায়। এর জন্য উল্লম্ব বা অনুভূমিক উভয় দিকেই জায়গা বাড়াতে হবে, প্রতিষ্ঠানও বাড়াতে হবে। শুধু সেশনজটের কারণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে, এর অবসানও ঘটাতে হবে। আমরা আশা করি, শিক্ষার মানের স্বার্থে, দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ফলপ্রসূ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027689933776855