শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) নামক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপুল বাজেটের এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে একশ্রেণীর আমলা লুটপাটের আয়োজন করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এসইডিপি প্রকল্পে প্রশাসন ক্যাডারদের লিয়েনে কাজ করার সুযোগ রাখা হচ্ছে। তাদের কারও কারও বেতন-ভাতা পাঁচগুণ পর্যন্ত বেশি দেয়ার কথা রয়েছে। দেয়া হবে দামি গাড়ি। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
অধিক বেতন ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে লিয়েনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কেন শিক্ষা প্রকল্পে নিয়োগ দেয়া হবে- সেই প্রশ্ন উঠেছে। সাধারণত বিদেশি সংস্থার কাজ করতে গেলে সরকারি কর্মকর্তাদের লিয়েনে ছুটি দেয়া হয়। সেক্ষেত্রেও কিছু বিধিবিধান মানা জরুরি। সরকারি প্রকল্পে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা লিয়েনে কাজ করছেন এমন নজির আছে বলে আমাদের জানা নেই। দেখা যায়, প্রকল্প যত বড় হয় সেখানে যোগ দিতে আমলাদের তোজোড় তত বাড়ে।
জানা গেছে, এসইডিপি প্রকল্পে ৮০ জন কর্মকর্তাকে লিয়েনে ও ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে যে, একটি প্রকল্পে কর্মকর্তার কী প্রয়োজন। তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তারা শিক্ষার মান উন্নয়ন করবেন নাকি বাড়তি বেতন, দামি গাড়ি আর বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ নেবেন- সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকার যখন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় সাশ্রয়ের পথ খুঁজছে উল্লিখিত প্রকল্পে এখন খরচ বাড়ানোর আয়োজন করা হচ্ছে।
এসইডিপি প্রকল্প মূলত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) ২৪টি প্রকল্পকে এক ছাতার নিচে আনার কাজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মাউশিতে যে লোকবল আছে সেটাই যথেষ্ট। এখানে লিয়েনে বা ডেপুটেশনে কাউকে নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও এত কর্মকর্তাকে লিয়েন বা ডেপুটেশনে নিয়োগ দেয়ার তোড়জোড় করা হচ্ছে কেন সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।
প্রকল্পের নামে কেউ কোন হরিলুটের আয়োজন করছে কি না- সেটা এখনি খুঁজে দেখতে হবে। কেউ যদি প্রকল্পের অর্থ লুট বা অপচয়ের আয়োজন করে তাকে বা তাদের চিহ্নিত করে আগেভাগেই বিদায় করতে হবে। শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে কেউ জনগণের টাকায় নিজের ভাগ্যোন্নয়ন করবে সেটা হতে পারে না। এ বিষয়ে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।