শিক্ষার মানোন্নয়নে সমাজ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই তাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখাই হচ্ছে তাৎপর্যপূর্ণ একটি কাজ। সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটির ভিত্তি স্থাপন হয়ে যায় যখন কোনো শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ শুরু করে। আর এ কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি সমাজ সম্পৃক্ততা বা সক্রিয় সহযোগিতা জরুরি। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।

নিবন্ধে আরও জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাশাপাশি সমাজের মানুষের অংশগ্রহণ তথা সমাজের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় জনগণের অংশ নেওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন। সমাজকে যদি আমরা বিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারি তাহলে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে। স্থানীয় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারি। বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেখার জন্য সরকার ও শিক্ষকের পাশাপাশি সমাজের জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। বিদ্যা্‌লয়ের সব কাজে জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। স্থানীয় মানুষ যদি নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে উদ্যোগী হয় তাহলে গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া সমাজের জনগণের অংশগ্রহণ বা সহযোগিতা না পেলে বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও শিক্ষার মানোন্নয়ন শতভাগ সম্ভব নয়। সমাজের জনগণ সহযোগিতা না করলে শিক্ষক, কর্মকর্তাদের পক্ষে বিদ্যালয় এলাকায় সঠিকভাবে শিশু জরিপ করা সম্ভব নয়। আমাদের অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা সন্তানকে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি করান না। তখন সমাজের সচেতন অভিভাবকরা বুঝিয়ে তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ব্যবস্থা করেন। মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, উঠান বৈঠকে তাদের উপস্থিতির মাধ্যমে খুব সহজে শিক্ষার্থীদের পাঠোন্নতি, ফলাফলসহ বিভিন্ন বিষয় সহজেই তাদের কাছে পৌঁছানো যায় ও সচেতন করা যায়। তা না হলে শিক্ষার মানোন্নয়নের কাজ আরও কঠিন হয়ে যায়। বিদ্যালয়ের সঙ্গে সমাজের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া রোধ করা সহজ হয়। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত হাজিরা ও ঝরে পড়া রোধ করার জন্য শিক্ষকদের পাশাপাশি এসএমসি সদস্যরা হোম ভিজিট করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে পারেন।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আগমন, প্রস্থান ও সময়মতো পাঠদান করছেন কিনা তা এসএমসি বা সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা দেখতে পারেন। এর মাধ্যমে সময়মতো উপস্থিতি ও পাঠদান নিশ্চিত হতে পারে। অনেক বিদ্যালয়েই শিক্ষকস্বল্পতা রয়েছে। স্থানীয় জনগণ, এসএমসি বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গ বিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করে প্যারা শিক্ষক নিয়োগ করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষকস্বল্পতা দূর করে শিক্ষার গুণগতমান বাড়িয়ে থাকেন। সরকারি অনুদানের পাশাপাশি স্থানীয় অনুদানের মাধ্যমে বা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, সংস্কার, মেরামত ইত্যাদি করতে পারেন। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বার্ষিক বনভোজন, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী পুরস্কার বিতরণ, শীতকালীন বস্ত্র বিতরণ, সমাপনী পরীক্ষার সময় পরীক্ষা-সংক্রান্ত সামগ্রী বিতরণ করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়।

এলাকাবাসী যখন মনে করেন এই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আমার বিদ্যালয় আর এর শিক্ষার্থীর ভালো করা মানে আমাদের এলাকার ভালো হওয়া। এসএমসি, পিটিএ, প্রাক্তন প্রতিষ্ঠিত শিক্ষার্থীবৃন্দ, বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় জনগণ যখন বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হন তখন ফলাফল ভালো হয়। পারস্পরিক সামাজিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমেই মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

লেখক : ফারজানা ববী, সহকারী ইনস্ট্রাক্টর, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, সদর, গাজীপুর।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002777099609375