শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষার রূপান্তরে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভারতের মহারাষ্ট্রে জি-২০ দেশগুলোর শিক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পর্যাপ্ত অর্থায়ন এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার শিক্ষার রূপান্তর প্রক্রিয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ। সুতরাং, আমি বিশ্বাস করি যে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। প্রযুক্তি সমাধানে প্রত্যাশার সব দিকগুলো উন্নত করার জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বও গুরুত্বপূর্ণ, এটি অ্যাক্সেস, ইক্যুইটি, অন্তর্ভুক্তি, ক্রয়ক্ষমতা এবং জীবন ও জীবিকার দক্ষতা বিকাশ এবং টেকসই সমাজ গঠনের দিকে আজীবন শিক্ষার সমস্যাগুলোকে সমাধান করে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি আমাদের যে নজর সেটি ফল দিতে শুরু করেছে। কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ভর্তির হার অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে হারে মেয়েদের এনরোলমেন্ট বেড়েছে তা বিস্ময়কর। কোভিডের পর শিক্ষার্থীদের শারীরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আমরা জোর দিচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার আমরা সবাই জাতিসংঘের রূপান্তরকারী শিক্ষা সম্মেলনে প্রজন্মগত সংকট মোকাবিলায় এবং এসডিজি-৪ অর্জনের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা অন্য লক্ষ্যগুলোর কেন্দ্রবিন্দু। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন অনুসরণ করে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাও কোভিড-১৯ মহামারী আক্রান্ত হয়েছে, এর প্রভাব থেকে আমরা এখন নিজেদের পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশের শিক্ষা সংস্কার নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা দরকার যা দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম। আর্থ-সামাজিক চাহিদার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। তাই নতুন ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক একবিংশ শতাব্দীর চাহিদা, আমাদের ভিশন ২০৪১ এবং দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সমাধান করছে। আমরা তাদের যোগ্যতা, বিশেষ প্রয়োজন, লিঙ্গ, ধর্ম, জাতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি নির্বিশেষে সমস্ত শিশুর মৌলিক দক্ষতার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ডিজিটাল রূপান্তরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল শিক্ষার ইকো-সিস্টেম বিকাশের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল শিক্ষাবিদ্যা এবং শিক্ষা, মূল্যায়ন, শিক্ষকের প্রশিক্ষণ, মনিটরিং এবং মেন্টরিং ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বৈশ্বিক সংকটের মুখে, আমাদের ব্যক্তিগত এবং সম্মিলিত দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র মহামারী, জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাবগুলো কমানোর জন্যই নয়, বরং এসডিজি-৪ অর্জন নিশ্চিত করার জন্য।