প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ইতিবাচক থাকলেও কর্মসংস্থানে সংকট বাড়ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। তাই সংকট কাটাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও অর্থনীতির খাতে বৈচিত্রের পাশাপাশি দক্ষ কর্মীর জন্য বাংলাদেশকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ বিশ্বব্যাংকের।
বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রতিনিয়ত ছাপ ফেলছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের মতো দেশগুলোতে এই অঞ্চলের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। তবে প্রবৃদ্ধির সফলতার মাঝেও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেকারত্ব।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সানেম ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ আয়োজনে করা দক্ষিণ এশিয়ার কর্মসংস্থান পরিস্থিতি নিয়ে এক সেমিনারে উঠে আসে এ তথ্য।
এ সময় উপস্থিত বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দক্ষিণ এশিয়াতে সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। অনানুষ্ঠানিক খাতে দক্ষ কর্মী পুরুষ ২১ শতাংশ এবং নারী ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। কর খাতে সংস্কার হলে বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বার্নাড হাভেন।
তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বৃদ্ধি এবং একটি ইতিবাচক ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার ক্ষমতা বৃদ্ধি, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার জন্য চাইল্ড কেয়ার সুবিধা বাড়ানো, অভিবাসন ব্যয় হ্রাস এবং সামাজিক সুরক্ষা জাল প্রসারিত করতে হবে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, কর্মক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোতে পুরুষ কর্মী কমার পাশাপাশি নারীর সংখ্যাও কমেছে। তৈরি পোশাক খাতের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে নতুন খাতে অর্থনীতির প্রবাহ তৈরি করার তাগিদ বক্তাদের।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য ড. রুবানা হক বলেন, ভালো চাকরি এবং আরএমজি সেক্টরে আপস্কিলিং এবং রিস্কিলিং উদ্যোগের উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি রয়েছে।
ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্নতার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত শিক্ষার পরিমাণ বাড়াতে হবে। পাশপাশি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে হবে।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, আসন্ন বাজেটে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হচ্ছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। বর্তমান শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং নীতি সংস্কার করা প্রয়োজন। সামাজিক সুরক্ষা বাড়াতে সরকারি বিনিয়োগের দক্ষতা এবং দক্ষ কর সংগ্রহ প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
এদিকে মুদ্রা বিনিময় হারের ওঠানামা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সেবাখাতকে অবহেলা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাধা হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।