শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ না দিলে মেলে না স্কুলে বরাদ্দের টাকা

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি |

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য আসা বরাদ্দের টাকা থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। স্কুলের বরাদ্দের টাকা তুলতে শিক্ষকদের কাছ থেকে ১০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ দাবি করেন তিনি। ঘুষ না দিলে তিনি টাকা আটকে রাখেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকরা।

তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে। তবে এখন পর্যন্ত তার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকরা বলছেন, দিন দিন বেড়েই চলেছে তার ঘুষ ও দুর্নীতি বাণিজ্য।

প্রধান শিক্ষক মো. বাবলু, মো. নাছির উদ্দীন, মো. কামাল উদ্দীন, মো. আব্বাছ উদ্দিন, নির্মল চন্দ্র দাসসহ অনেকে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে অভিযোগ করে বলেন, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনলাইনে শিক্ষক বদলি নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগ করলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। 

জানা গেছে, সরকারিভাবে চরফ্যাশন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের নামে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের ক্ষুদ্র মেরামত কাজের বিভিন্ন বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ১০২টি বিদ‍্যালয়ের নামে ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ আসে। নিড বেইজড প্লেইং এক্সেসরিজ কেনার জন্য ছয়টি বিদ্যালয় প্রতি বরাদ্দ আসে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে। ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের নামে স্লিপ বরাদ্দ বাবদ বিদ‍্যালয় প্রতি ৫০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। ২১২টি বিদ‍্যালয়ের নামে প্রাক-প্রাথমিক বরাদ্দ বাবদ বিদ‍্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। ২১২টি বিদ‍্যালয়ের নামে কোভিডের সময়ে বিদ‍্যালয় প্রতি ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ আসে। ওয়াস ব্লক বাবদ বিদ‍্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ আসে। 

শিক্ষকদের অভিযোগ, স্কুলের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয় বিদ‍্যালয় প্রতি ১০ হাজার টাকা। বেইজড প্লেইং এক্সেসরিজ কেনার বরাদ্দ থেকে বিদ‍্যালয় প্রতি ৭ হাজার ৫০০ টাকা। রুটিন মেইনটেন‍্যান্স থেকে বিদ‍্যালয় প্রতি ২ হাজার টাকা। প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫০০ টাকা, ওয়াশব্লক থেকে বিদ‍্যালয় প্রতি ৫০০ টাকা, কোভিড-১৯ বরাদ্দ থেকে বিদ‍্যালয় প্রতি ৫০০ টাকা ঘুষ নেন শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল ইসলাম। 

শিক্ষকরা জানান, টাকা দিলেই কেবল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোশাররফ হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসারের প্রত্যয়ন মেলে। যার মাধ্যমে কাজের মান সন্তোষজনক বলে প্রত্যয়ন সংযুক্ত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদনের মাধ্যমে চেক দিলে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা যায়।  

জানতে চাইলে দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলাম। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মেরামত বা সংস্কারের কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন করেছি। নিবিড় পর্যবেক্ষণে কাজগুলো সম্পন্ন করি। প্রকল্পের কাজে কোনো শিক্ষকের কাছে থেকে আমি কোনো টাকা নেইনি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027239322662354