জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিয়োগ, বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন প্রধান শিক্ষক। মাগুরার মহম্মদপুর মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম নাসিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগে মামলা করেছেন মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন। বুধবার (১৩ মার্চ) মহম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলাটির তদন্ত এবং পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ কে এম নাসিরুল ইসলাম ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেছেন, দায়িত্ব পালনকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ও সুনামের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। ২০১৫ সালে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সই জাল করে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে চারজন কর্মচারী নিয়োগ করে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেছেন। আর নিয়োগপ্রাপ্তরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও গত ৪ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন।
ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরো যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো হলো- বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে জাতীয়করণের নাম করে অন্তত ২৫ লাখ টাকা আদায়, বিদ্যালয়ের ৬২টি দোকান বিধি বহির্ভূতভাবে বরাদ্দের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করেও বিদ্যালয়ের হিসাবে জমা না দেওয়া, চলতি শিক্ষা বছরে বিদ্যালয়টির ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষকের একক সিদ্ধান্তে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৪৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি এবং বিদ্যালয় ফান্ড থেকে গত এক বছরে নিজের ধূমপানের পেছনে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়। এ ছাড়াও বিদ্যালয়টির দুটি হিসাব যৌথ সইয়ে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে একক সইয়ে সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন করেছেন। এমন সব আর্থিক দুর্নীতির বিষয় উল্লেখ করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন থানায় মামলাটি করেন।
এ বিষয়ে এ কে এম নাসিরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, মামলাটি থানায় রেকর্ডের পর যাবতীয় কাগজপত্র দুদকের যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। তাঁরা মামলাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।