শিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলা-ইংরেজি ভাবনা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকতে ইংরেজি ভাষার কোনো বিকল্প নেই, এটা সবারই জানা। এ জন্য প্রতিটি ক্লাসেই ইংরেজি বাধ্যতামূলক কোর্স। বাংলা ভার্সনের পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সন স্কুলগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে ক্রমেই। যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনটি লিখেছেন পূর্বাশা পৃথ্বী। 

বিশ্বায়নের যুগে এটি মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাংলা ভার্সনের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথমত যে বিষয়টি সমস্যা তৈরি করে তা হল, স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন বাংলা অনুবাদ শব্দ।

উদাহরণস্বরূপ, স্কুলের পাঠ্যবইতে হয়তো ‘বণিকবাদ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে; মার্কেন্টাইলিজম শব্দের সঙ্গে যথেষ্ট পরিচয় না থাকার কারণে কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে এসে কারও মনে হতে পারে- এ বিষয়ে তো আমি জানি না!

স্কুলে-কলেজে পদার্থবিজ্ঞানে জড়তার ভ্রামক শব্দটি বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু moment of inertia কী- এটা জিজ্ঞেস করা হলে হয়তো বলতে পারছি না। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা সর্বজনীন টার্ম অর্থাৎ ইংরেজি টার্মটিই পড়ি, শিক্ষার্থীদের বোঝার সুবিধার্থে স্কুলের পাঠ্য থেকেই এসব ইংরেজি টার্মের ব্যবহার থাকা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত যে বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলতে চাই- আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে লেকচার ও পরীক্ষা ইংরেজি ভাষায় প্রদান করা হয়। বিদেশি লেখকদের ইংরেজিতে লেখা মোটা মোটা বইগুলো হঠাৎ করে শুরু করায় অনেক শিক্ষার্থীরই বোধগম্য হয় না। একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী নামকরা স্কুল-কলেজ থেকে আসে না, উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সান্নিধ্য সবাই লাভ করতে পারে না। দেশের অনেক স্কুল-কলেজেই দক্ষ ইংরেজি শিক্ষক নেই।

এসব কারণে অনেক শিক্ষার্থীই ক্লাসরুমে ইংরেজি বুঝতে ব্যর্থ হয় এবং এর ফলে হতাশ হয়ে পড়ে। এজন্য দেশের প্রতিটি স্কুল-কলেজে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ শিক্ষক প্রয়োজন।

এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ যেটা হতে পারে- আলোচ্য বিষয়ের ওপরে লেখা কোনো বাংলা বই পড়ে বিষয়টি বুঝে নেয়া এবং এরপর ইংরেজি বইটা বুঝে বুঝে পড়া।

কিন্তু বইয়ের বাজারে গেলে দেখা যাবে, বহু বইয়ে পুরনো লেখা রয়েছে এবং তা পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। সবচেয়ে বড় কথা, সাম্প্র্রতিক বিষয়ের ওপর বাংলায় লেখা ভালো বই নেই। যা আছে তা হল, গাইড বই।

সেটিও হয়তো আক্ষরিক অনুবাদ করা, যা মুখস্থ করা সহজ; কিন্তু বোঝা সহজ নয়। যে বাংলা ভাষার জন্য এ দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে, সে ভাষাতেই যদি আমরা শিক্ষাচর্চা না করি এবং বিদেশি ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিশাল অংশের জন্য তা কঠিন ও দুর্বোধ্য করে তুলি; তাহলে আমরা ভাষার জন্য এ ত্যাগের মূল্যায়ন কতটুকু করছি? আমাদের উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার সুবিধার্থে বাংলায়ও তাত্ত্বিক বইগুলো লেখা প্রয়োজন বলে মনে করি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ - dainik shiksha অষ্টম পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করবে ইউএনএফপিএ ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র - dainik shiksha ইসরায়েলকে বোমা পাঠানো বন্ধ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে - dainik shiksha ভুইফোঁড় শিক্ষক সমিতি নেতাদের এমপিও বাতিল হতে পারে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! - dainik shiksha ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের জাপান টিকিট ৩০ লাখ! জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল - dainik shiksha জাল সনদধারী শিক্ষকের এমপিও বাতিল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028560161590576