নতুন ভর্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো পরীক্ষা নিতে পারবে না। লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু নতুন বছরে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পরীক্ষা নিতে চাচ্ছে রাজধানীর উত্তরার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ। সে জন্য ইতোমধ্যে তারা অনলাইনে আবেদন ফরম গ্রহণ শুরু করেছে শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে চলা প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সে আবদার নাকচ করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লটারিকে প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে বলা হয়েছে। গতকাল বুধবার এ নির্দেশনা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে সভাপতির পদে আছেন। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল তায়েফ উল হক। নতুন প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে শিশুদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা রুখতে সরকার লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। সরকারি স্কুলের পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলের ভর্তিতেও চলছে লটারি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে খোদ শিক্ষা সচিবের প্রতিষ্ঠান ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার আবদার করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী নির্বাচনের অনুমতি চেয়েছিলেন। তা নাকচ করে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে অধ্যক্ষকে পাঠানো চিঠির কপি দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা ভর্তি নীতিমালায় প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির জন্য ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে লিখিত পরীক্ষার কোনো বিধান রাখা হয়নি। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে দৈনিক আমাদের বার্তা। প্রতিষ্ঠানে ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। পরে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে প্রতিষ্ঠানটির টেলিফোন নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
স্কুলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের সরকারি বেসরকারি স্কুলে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের শিক্ষার্থী ভর্তিতে কোনো পরীক্ষা নেয়া যাবে না। শুধু লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। সরকারি স্কুলগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত ভর্তির লটারিতে অংশ নেবে। আর ঢাকা মহানগরসহ বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা সদরের সদর উপজেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় লটারির আয়োজন করা হবে। ঢাকার কোনো বেসরকারি স্কুল চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় লটারির আয়োজন করতে পারবে। মেট্রোপলিটন ও জেলা সদরের স্কুলগুলো ছাড়া অন্যান্য বেসরকারি স্কুলেও ভর্তির লটারি আয়োজন করা হবে। এ ক্ষেত্রে ভর্তি নীতিমালা অনুসারে ভর্তি কমিটির প্রতিনিধির উপস্থিতিতে লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করতে হবে।