শিক্ষা সফরে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরেছেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শামীম কবির সুইট। শুক্রবার কলেজের শিক্ষা সফরে মুজিবনগর জেলায় যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষা সফর বাতিল করা হয়েছে।
শামীম কবির সুইট নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিষয়ের প্রদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে শুক্রবার মেহেরপুরের ঐতিহাসক স্থান মুজিবনগরে ছিল শিক্ষা সফর। মনোবিজ্ঞান বিষয়ের প্রদর্শক শামীম কবির সুইটও ছিলেন তাদের একজন। কলেজ চত্বরে রান্না করে গাড়িতে তোলাসহ নানা কাজে ব্যস্তা ছিলেন তিনি। ঠিক সকাল ১০ টায় কলেজ চত্বর থেকে দুটি বাস রওনা হয় মুজিবনগরের উদ্দেশে। মাত্র এক কিলোমিটার যাওয়ার পরেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন সুইট। সহকর্মীদের গাড়ি থামাতে বলেন। মুলাডুলি রেলগেটে উঠার আগেই থেমে যায়। ততক্ষণে তিনি সহকর্মী মণির কোলে ঢলে পরেন। তাকে রাজাপুর বাজারে শশী ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিসক জানান শিক্ষক সুইটের হৃদযন্ত্র চিরতরে থেমে গেছে।
তারা আরো জানান, মুহূর্তে সফরের আনন্দ বিলীন হয়ে বিশাদে পরিণত হয়। সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। অধ্যক্ষ সফর বাতিল করে কলেজে ফিরে আসেন। আর কলেজ অধ্যক্ষের মাইক্রোবাসে তুলে সুইটের মরদেহ নেয়া হয় তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কোয়াক ডাক্তার মসলেম উদ্দিনের ছেলে। খবর পেয়ে সদাহাস্যজ্জ্বল সুইটের মরদেহ দেখতে তার বাড়িতে হাজারো মানুষের ভীর জমে।
সুইট একমেয়ে ও একছেলের জনক। মেয়ে হুমায়রা জাহান পাঁচবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী আর ছেলে ফাহিম কবীর রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সপ্তম শেষ করে অষ্টমে উঠবেন। আর স্ত্রী গৃহিনী।
সুইটের একমাত্র ছোটভাই খলিশাডাঙ্গা কলেজের প্রভাষক মাসুম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বাবা-মায়ের আমরা মাত্র দুটি সন্তান ছিলাম। এখন মাকে কেমন করে বুঝাবো। ভাই সকালে সফরে গিয়ে এভাবে লাশ হয়ে ফিরবেন তা বিশ্বাস হচ্ছে না।
রাজাপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুগলক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষক শামীম কবির প্রতিষ্ঠা লগ্নেই এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। তিনি সবার প্রিয়জন ছিলেন। সবার সঙ্গেই ছিলো তার সৎভাব। তার মৃত্যুতে আমারা একজন দক্ষ সহকর্মীকে হারালাম।