শিক্ষা সরকারিকরণ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্স |

২০২০-২১ বাজেট পেশ হয়ে গেল। শিক্ষায় গত বছরের তুলনায় ৫ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষক সংগঠনগুলো এবারের বাজেটে ইউনেস্কো ও আইএলও প্রস্তাবনায় বাংলাদেশের স্বাক্ষর অনুযায়ী জিডিপির ৬ শতাংশ ও মোট বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছেন। সেখানে এবার জিডিপির ২ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এমপিওভুক্ত, নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবি, কারিগরী ও ইবতেদায়ি মাদরাসার সমস্যা, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের স্বেচ্ছাচারিতাসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে নানামুখী বৈষম্য বিরাজ করছে। এসব বৈষম্য দূরীকরণের একমাত্র পথ শিক্ষা সরকারিকরণ।

শিক্ষা সরকারিকরণ করা হলে সমগ্র দেশের সব শ্রেণির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক ও অভিন্ন নিয়ম নীতিতে পরিচালিত হবে। এতে শিক্ষকের জীবন মান উন্নত হবে, যা শিক্ষার ক্রমাগত মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া শিক্ষার্থী-অভিভাবক বিভিন্নমুখী সুবিধা পেতে থাকবে। শিক্ষকদের অভাব অনটন ও অমর্যাদায় রেখে শিক্ষার কাঙ্ক্ষি লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই শিক্ষকদের সমন্বিত দাবি শিক্ষা সরকারিকরণ। আশা করি বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার মুজিববর্ষে শিক্ষা সরকারিকরণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় সোনার সন্তান ফলাতে একটুও পিছপা হবে না। বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন (বাশিইউ) বরাবরই এমনটাই দাবি জানিয়ে আসছে।

সরকারিকরণ যেহেতু সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই অনতি বিলম্বে শিক্ষকদের নিম্নোক্ত দাবীসমূহ আশু বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই-

  • আসন্ন ঈদ উল আজহার পূর্বেই বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বোনাস ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে। 
  • বাড়ি ভাড়া ১০০০ টাকার পরিবর্তন মূল বেসিকের ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে। 
  • মেডিক্যাল ভাতা ৫০০ টাকার পরিবর্তে মূল বেসিকের ২৫ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে। 
  • জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
  • শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদা ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী করতে হবে। 
  • শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে এবং মেধাবীদের এ পেশায় আকৃষ্ট করতে স্বতন্ত্র আকর্ষণীয় বেতন নিশ্চিত করতে হবে। 
  • শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে ধর্মীয় শিক্ষা জোরদার করতে হবে। 
  • পাঠ্যক্রম সহজীকরণ ও সময়োপযোগী করে পরীক্ষা ও কোচিং নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। 

শিক্ষায় বিনিয়োগ কখনও রাষ্ট্রের ব্যয় নয়, বরং সম্পদ। এ সম্পদ বৃদ্ধিতে উল্লেখিত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়ন ও শিক্ষা সরকারিকরণ নিশ্চিত করা জরুরি বলে আমি মনে করি।

লেখক : মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্স, অতিরিক্ত মহাসচিব, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন (বাশিইউ)।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় - dainik shiksha কাল থেকে শিক্ষা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির - dainik shiksha বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়ানোর নির্দেশ রাষ্ট্রপতির ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ - dainik shiksha ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha সিনিয়র আইনজীবীরা বিচার বিভাগের স্বার্থে কথা বলবেন, আশা প্রধান বিচারপতির দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031490325927734