শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে অপরাধ বেশি হচ্ছে : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সমাজে শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে অপরাধ বেশি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তাঁর মতে, এমন কোনো অপরাধ নেই যা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে হচ্ছে না। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান উপলক্ষে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড (ডিবিবিএল) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয়, শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে অপরাধ বেশি হচ্ছে এবং এমন কোনো অপরাধ নেই যেটা শিক্ষিত লোকের মাধ্যমে ঘটছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে জাতি যত বেশি শিক্ষিত ও উন্নত, সে জাতির মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা তত কম। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের গতি ও শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক অপরাধ না কমার ব্যাপারে চিন্তিত আমরা। এটা কেন হচ্ছে, তা ভাবার সময় এসেছে। আমাদের পরিবার, সমাজ বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার আসল মর্মার্থ আত্মস্থ করে তোমাদের মাদক ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন বলেন, সমাজে আরেকটি বড় সমস্যা দুর্নীতি। এটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নীতি, যা সমাজের বিরাট অংশকে শোষণ করছে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি সমাজে ব্যাপক বৈষম্য তৈরি করছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্যসহিষ্ণুতা নীতি বাস্তবায়ন করেছেন এবং এই নীতিতেই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ব্যাংকিং খাত বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ নির্মাণে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধ কর্মসূচিতে (সিএসআর) ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করার কথা, সেখানে ডিবিবিএল ৫৬ শতাংশ ব্যয় করছে। ডিবিবিএলের মতো অন্য ব্যাংকগুলোও সামাজিক দায়বদ্ধতার বিভিন্ন উদ্যোগের কাজ করছে। আরও ব্যাংকের এগিয়ে আসা উচিত।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, সামাজিক দায়বদ্ধতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত মেধাবী তবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ৫৯ হাজার ৭৩৪ জন শিক্ষার্থী বৃত্তির সুযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫০৬ জন বৃত্তি পাচ্ছে। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের জন্য এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে অধ্যয়নরত ২ হাজার ৩৮ জনকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ বলেন, শতকরা ৯০ ভাগ বৃত্তি দেওয়া হয় গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের। আর শতকরা ৫০ ভাগ দেয়া হয় ছাত্রীদের। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ডিবিবিএল সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে তাদের লভ্যাংশের সিংহভাগ ব্যয় করে আসছে দেশের সামাজিক কল্যাণমুখী কার্যক্রমে। ভবিষ্যতেও এগুলো অব্যাহত থাকবে।

ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ডিবিবিএল ৯০৫ কোটি টাকা খরচ করেছে। এর মধ্যে ৪৫০ কোটি টাকা শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হয়েছে। এ খাত থেকে ৪০০ কোটি টাকা বৃত্তি দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে ব্যাংক বৃত্তি বাবদ ৬০ কোটি টাকা বছরে দিচ্ছে। যত দিন এসব শিক্ষার্থী পড়াশোনা চালিয়ে যাবে, তত দিন তাদের বৃত্তি দেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038230419158936