পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ছাত্রশিবির সন্দেহে তিন ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের পর ওই তিন ছাত্রকে পুলিশে দেয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা হলেন লোক প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের গোলাম রহমান জয়, ইংরেজি বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের আসাদুল ইসলাম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আজিজুল হক। তাঁদের মধ্যে আসাদুল ইসলাম ও আজিজুল হককে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, আর গোলাম রহমানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ছাত্রলীগ ও পাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শিক্ষার্থীদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি। তাঁদের সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, শিক্ষার্থীদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাতে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে তাঁদের ‘শিবির সন্দেহে’ ধরে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে যান। পরে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের পৃথক কক্ষে নিয়ে স্টাম্প, রড, হকিস্টিক, প্লাসসহ দেশি অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয় জোর করে কাগজে লিখিত স্বীকারোক্তি নিয়ে পুলিশে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের সঙ্গে নিজের এবং সংগঠনের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কারা তিন শিক্ষার্থীকে মারপিট করেছে আমরা জানি না। তবে তারা যে শিবিরকর্মী এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
এ বিষয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বেশ কয়েকজন শিবিরকর্মী ক্যাম্পাসে গোপন বৈঠক করছিল। এ সময় তাদের আটক করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে আমরা তাদের উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। নির্যাতনের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আহত অবস্থায় ওই তিন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’