শীর্ষ তিন পদ শূন্য রেখেই চলছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শীর্ষ তিন পদ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার ছাড়াই চলছে দেশের অন্যতম বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ( শেকৃবি)! ১৪ আগস্ট এ তিনটি পদ খালি হলেও গত এক মাসেও কোন পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে এক অভিভাবকহীন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা ছাড়াও আটকে আছে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের বেতন ভাতা। প্রধান এ তিন পদের জন্য সম্ভাব্য অধ্যাপকসহ বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক কর্মকর্তারা দ্রুত শূন্য পদ পূরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের কাছে দাবি তুলেছেন। মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিভাষ বাড়ৈ।

প্রতিবেদনে আর জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ তার মেয়াদ শেষে বিদায় নিয়েছেন গত ১৪ আগস্ট। এরপর থেকে শূন্য রয়েছে পদটি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় একই দিনে বিদায় নিয়েছেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ সেকেন্দার আলী। মেয়াদ শেষে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল হক বেগও বিদায় নিয়েছেন একই দিনে। ফলে ১৪ আগস্ট একই সঙ্গে শীর্ষ তিনটি পদ শূন্য হয়ে পড়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

একই সঙ্গে তিনটি পদ শূন্য হওয়ায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার স্বার্থে দ্রুত এসব পদ পূরণের দাবি উঠে প্রথম দিনেই। তখনই শিক্ষকরা জানান, শীর্ষ তিনটি পদ খালি হওয়ায় অনেকটাই অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এক মাসের মাথায়ও এসব পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করলেও এখন পর্যন্ত নিয়োগের আদেশ জারি করা সম্ভব হয়নি। ফলে একদিকে যেমন এসব পদে আসার জন্য প্রভাবশালী শিক্ষকদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে তেমনি একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

শিক্ষক-কর্মকর্তারা বলছেন, উপাচার্য ও ট্রেজারার না থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আগস্ট মাসের বেতন পাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই যোগ্য প্রার্থীদের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের পদে অতি দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্র জানায়, উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন তোলা, ফল প্রকাশ করা, ফাইল অনুমোদন করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে জরুরী কোন সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী মোখছেদুর রহমান বলেন, আমরা মাসের ২৮ বা ২৯ তারিখের মধ্যেই বেতন পেয়ে যাই। কিন্তু ভিসি না থাকায় কবে নাগাদ বেতন পাব এবার তা জানি না। ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে ধার দেনা করে চলছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ বশিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৪ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ সেকেন্দার আলী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল হক বেগ স্যারের মেয়াদ শেষ হয়।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শেকৃবি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই শীর্ষ ওই তিন পদে নিয়োগ পেতে আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন অধ্যাপক সরকারের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে জোর লবিং-গ্রুপিং চলছে। তবে উপাচার্য পদের লড়াইয়ে শোনা যায় সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া ও সদ্য সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ সেকেন্দার আলী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল হক বেগের নাম। তাদের মধ্যেই কেউ একজন উপাচার্য হচ্ছেন বলেই শোনা যাচ্ছে।

উপ-উপাচার্য এবং ট্রেজারার পদের জন্য মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক কুমার পাল, কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের নাম শোনা যাচ্ছে।

শীর্ষ পদের জন্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারাও চাচ্ছেন দ্রুত নিয়োগ হোক। সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেও সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল হক বেগ বলেছেন, সরকার যাকেই দায়িত্ব দিক না কেন দ্রুত হলেই ভাল হয়। প্রতিষ্ঠানের জন্যই ভাল হয়। প্রধান প্রধান পদ শূন্য থাকায় কিছু সমস্যাতো হচ্ছেই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049059391021729