শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ, দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ছাত্র সহপাঠীর সঙ্গে বৃষ্টিতে একই ছাতার নিচে বাড়ি যাওয়া এবং ঘাড়ে হাত রাখায় জীবনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির স্কুলের দুই শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

ওই দুই ছাত্রছাত্রীকে স্কুলের সহকারী শিক্ষক শামসুল ইসলাম বেধড়ক মারধরও করেন বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে একমাস ধরে লেখাপড়া বন্ধ তাদের।

সরেজমিনে জানা যায়, জয়পুরহাট পাঁচবিবি উপজেলার দিবাকরপুর পাকুরিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা সিদ্দীকা। ২৩ জুলাই স্কুল শেষে কোচিংয়ে পড়ার পর বাড়ি যাওয়ার পথে বৃষ্টি নামে। এ সময় আয়েশার সঙ্গে ছাতা থাকলেও তার সহপাঠী তানভীর বৃষ্টিতে ভিজছিল। তখন তানভীরও তার ছাতার নিচে আসে। এ সময় আয়েশা তানভীরের ঘাড়ে হাত রাখে। ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক শামসুল ইসলাম তাদের দেখতে পান।

জানা গেছে, পর দিন স্কুলের লাইব্রেরি কক্ষে আয়েশা ও তানভীরকে খারাপ অপবাদ দিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এরপর তানভীর ও আয়েশাকে ছাড়পত্র দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।

তবে দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে স্কুলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও মিথ্যা বলার অভিযোগ থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের ছাড়পত্রে ‘নৈতিক চরিত্র ভালো, আচরণ সন্তোষজনক’ বলে উল্লেখ করে।

স্কুলছাত্রী আয়েশা সিদ্দীকা বলেন, এক মাস আগে স্কুল ছুটির পর প্রাইভেট শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার হাতে ছাতা থাকায় সহপাঠী তানভীরও ছাতার নিচে আসে ও আমার ঘাড়ে হাত রাখে। এ সময় শামসুল স্যার পেছনে আসছিল এবং আমাদের দেখতে পান। পর দিন লাইব্রেরি কক্ষে ডেকে বেত দিয়ে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করেন এবং বাড়িতে এনে রেখে যান। বাড়িতে এসে অজ্ঞান হয়ে যাই। আমি কোনো অন্যায় করেনি এবং স্যারের কারণে আজ আমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে।

আয়েশার চাচা মনোয়ার হোসেন, চাচী নুপুর, প্রতিবেশী ফেরদৌসী, সাইদুল ইসলামসহ আরও অনেকে বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের আয়েশার লেখাপড়ার খরচ মেটাতে বাবা ও মা দুজনই ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করে। দাদির কাছে রেখে জীবনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়েশাকে পড়ালেখা করাতেন। মারধর ও ছাড়পত্র দেয়ার কারণে লোকলজ্জায় সে বাড়িতে বসে আছে। আশপাশে ওই স্কুল ছাড়া তেমন স্কুলও নেই। মেয়েটিকে নিয়ে আমরা চরম হতাশায় আছি।

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক শামসুল ইসলাম অল্প মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, মারার বিধান না থাকলেও অভিভাবকরাই শাসন করার অধিকার দিয়ে যান। এ জন্য সামন্য একটু মেরেছি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাভঙ্গ করায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। মারধর যিনি করেছেন তাকেই দায়ভার নিতে হবে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি হাফিজুর রহমান জানান, আমি শুনেছি স্কুলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ্ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0073990821838379