শেকৃবিতে গবেষণা : ‘কালো সোনায়’ সম্ভাবনা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে স্থানীয় মহিষের জাত উন্নয়ন করে অধিক উৎপাদন ও প্রজনন ক্ষমতাসম্পন্ন মহিষের জাত তৈরি ও সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১৬২ কোটি ৯৩ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে একদিকে দেশে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ হবে; অন্যদিকে মহিষ উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটবে। একই সঙ্গে মহিষ খামারিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থারও উন্নয়ন হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন শাহাদত হোসেন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত গবেষকরা জানান, মহিষের দুধ উৎপাদনক্ষমতা এবং দুধের গুণগত মানের কারণে এটি কালো সোনা নামে পরিচিত। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ু মহিষ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। দুধ উৎপাদনে মহিষের অবদান যেখানে ভারতে ৫৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ৬৭ শতাংশ, নেপালে ৭১ শতাংশ, সেখানে একই অঞ্চলভুক্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে তা মাত্র ৪ শতাংশ।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা সামছুল আলম জানান, এই কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বিদ্যমান তিনটি মহিষ খামার আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ১৬০টি উন্নত জাতের মহিষ ভারত থেকে ক্রয় করা হবে। উন্নত জাতের মহিষ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ইন্টারমেটিং কর্মসূচির অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ভেটেরিনারি ডিসপেনসারি এবং বিভিন্ন খামার যন্ত্রপাতি, মেশিনারিজ ও সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে খামারি ও উদ্যোক্তাসহ মোট ছয় হাজারজনের প্রশিক্ষণ এবং চারটি কর্মশালা সম্পন্ন হবে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে খামারি পর্যায়ে কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট সংকর জাতের উন্নত মহিষ পাওয়া যাবে এবং দেশীয় বাজারে হৃষ্টপুষ্ট মহিষ, মহিষের দুধ এবং মহিষের দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যের চাহিদা পূরণ হবে।

প্রকল্প পরিচালক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি দেশের আটটি বিভাগের মহিষ ঘন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত উপকূলবর্তী এলাকাসহ ২০০টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হবে। ফলে সেসব এলাকার কৃষকরা মহিষ পালনে উপকৃত হবে। তারা আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হবে, কৃত্রিম প্রজননের জন্য মানসম্পন্ন উপকরণ, বীজ বা সিমেনের প্রাপ্যতা বাড়বে, অধিক দুধ ও মাংস উৎপাদনের মাধ্যমে উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জিত হবে। ফলে মহিষপ্রবণ এলাকার কৃষকদের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অংশীদাররাও এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দ্বারা লাভবান হবে।

ডা. রফিকুল জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে ক্রমবর্ধমান প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ হবে। এতে বেসরকারি শিল্পোদ্যোক্তারাও প্রাণিসম্পদ সাবসেক্টরে বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে।

প্রকল্প সমন্বয়ক ও পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা ডা. মুহসীন তরফদার রাজু বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে নারী, শিশু ও পুষ্টিহীন জনগোষ্ঠী সরাসরি উপকৃত হবে। আধুনিক ও মানসম্পন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশে মহিষ থেকে দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিদের আয়ের উৎস, পুষ্টি সরবরাহ এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে মহিষ পালন সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম খামারি পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারলে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.006464958190918