শেখ হাসিনার মন ভালো নেই: জয়

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং সেটি ঘিরে পরবর্তীতে দেশে সহিংস পরিস্থিতির কারণে পতন ঘটে শেখ হাসিনা সরকারের। বিক্ষোভ-বিরোধীতার মুখে চুপিসারে দেশ ছেড়ে চলে যেতেও বাধ্য হন তিনি। সম্প্রতি এ নিয়ে জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন শেখ হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

তাকে প্রথম প্রশ্নই ছিল, কেন শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লেন? সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, যারা সে সময় রাস্তায় ছিলেন, তারা শুধু আন্দোলনকারী ছিলেন না। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তাই পরিবারের সবাই তাকে দেশ ছেড়ে যেতে বলেন। যদিও শেখ হাসিনা শুরুতে তা চাইছিলেন না বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ফলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঝুঁকির মুখে পড়ে গেলেন কিনা, এমন প্রশ্ন জয় বলেন, ঝুঁকির মুখে পড়ে গিয়েছিল আগেই। হামলা-নির্যাতন চলছিল আগে থেকেই। মন্ত্রীদের বাসা জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, নেতাকর্মীদের বাসায় আগুন দেয়া হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মিউজিয়াম পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এরজন্য আওয়ামী লীগ দায়ী নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনেক সিনিয়র নেতাই শেখ হাসিনার দেশত্যাগের বিষয়টি জানতেন না, একথার সত্যতাও জানতে চাওয়া হয়। জয় বলেন, একদিন আগে সিদ্ধান্ত হয়। শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। কিন্তু যখন সবাই গণভবনের দিকে যাওয়া শুরু করলো, তখন পরিবারের সদস্যরাই তাকে বলেন, আর সময় নেই।

একদিন আগেই কেন বলা হলো না, এমন প্রশ্ন উত্তরে জয় বলেন, পরের দিন ঘোষণার প্রস্তুতি ছিল।

রাজনীতিতে আসবেন কিনা এমন প্রশ্নে সরাসরি জয় বলেন, না। আরও বলেন, মা (শেখ হাসিনা) বাদে আমরা সবাই দেশের বাইরে সেটেল্ড (স্থায়ী বসবাসকারী)। এখানে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এতবছর দেশের জন্য অনেক কিছু করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। এতকিছুর পরও দেশের মানুষ যদি আমাদের সাথে এমন করে, তাহলে আমার আর কিছু বলার বা করার নেই।

তাহলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বে কে থাকবে? এমন প্রশ্নে জয় বলেন, এটা এখন আর আমাদের দায়িত্ব না। ভবিষ্যতে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিতে পারবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমি নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে বলতে পারি না। তাদের জান বাঁচানো হচ্ছে আমার প্রধান দায়িত্ব।

সে ক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জয় উত্তর দেন একবাক্যে। বলেন, আমরা চেষ্টা করছি।

পরে বলেন, আওয়ামী লীগ মরে যায়নি। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল। এখনও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ভোটে জয়লাভ করবে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রশ্ন করা হয়, শেখ রেহানা বা তার পুত্রের রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা আছে কিনা? জয় বলেন, না, কোনো সম্ভাবনা নেই।

শেখ হাসিনা কোথায় আছেন, কেমন আছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরও দেন জয়। বলেন, তিনি দিল্লিতে আছেন বোন পুতুলের কাছে। ভালো আছেন, তবে তার মন খুব খারাপ। কারণ, যেই দেশের জন্য শেখ হাসিনার পুরো পরিবার প্রাণ দিয়েছেন, নিজে জেল খেটেছেন, অনেক উন্নয়ন করেছেন; সে দেশের মানুষ তাকে বের করে দেবে, তাতে তিনি খুব দুঃখ পেয়েছেন।

আপাতত শেখ হাসিনা দিল্লিতেই থাকবেন বলে জানান জয়। বলেন, তার মায়ের মার্কিন ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তও গুজব। দ্রুত মায়ের সাথে দেখা করতে যাবেন বলেও জানান। তবে কখন, তা ঠিক করা হয়নি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকদিন ধরেই সুশীল সমাজ তাকে দেশ পরিচালনার জন্য চাচ্ছিলেন। এখন দেখি কীভাবে তিনি দেশ পরিচালনা করেন। একটি দেশ চালানো এত সহজ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়। বলেন, যেভাবে লুটপাট চলছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশ সিরিয়া বা পাকিস্তান হয়ে যাবে। দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, খুব শিগগিরই দেশের মানুষ বলবে, শেখ হাসিনার আমলই ভালো ছিল।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এনটিআরসিএর নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর - dainik shiksha এনটিআরসিএর নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর বৈষম্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে ঢাবি শিক্ষক সমাজের দশ প্রস্তাব - dainik shiksha বৈষম্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে ঢাবি শিক্ষক সমাজের দশ প্রস্তাব কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের - dainik shiksha কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha একাদশের রেজিস্ট্রেশন শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর উপবৃত্তি কর্মসূচির প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন ৫০০ শিক্ষক - dainik shiksha উপবৃত্তি কর্মসূচির প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন ৫০০ শিক্ষক ছাত্রলীগ নেত্রীরাও স্কুল-মাদ্রাসা অডিটের দায়িত্বে - dainik shiksha ছাত্রলীগ নেত্রীরাও স্কুল-মাদ্রাসা অডিটের দায়িত্বে ছয় দফা দাবিতে তেজগাঁওয়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ - dainik shiksha ছয় দফা দাবিতে তেজগাঁওয়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের নতুন প্রস্তাব - dainik shiksha রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে ঢাবি অধ্যাপকের নতুন প্রস্তাব কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের - dainik shiksha কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীদের সেপ্টেম্বরে লিখিত পরীক্ষার ফল, ভাইভা অক্টোবর - dainik shiksha সেপ্টেম্বরে লিখিত পরীক্ষার ফল, ভাইভা অক্টোবর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029990673065186