বিগত সরকারের সময়ে গবেষণায় বরাদ্দ ছিল অপ্রতুল। গবেষণায় যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, তা উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে যথেষ্ট ছিল না। এ ছাড়া বিগত ১৪ বছরে শিক্ষা খাতে অনুন্নয়ন এবং উন্নয়ন ব্যয়ের প্রকৃত ব্যয়ের মধ্যে যথেষ্ট বৈষম্য দেখা গেছে। দেখা গেছে, পরিচালন ব্যয় সবসময়ই উন্নয়ন ব্যয়কে ছাড়িয়ে গেছে।
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন বিষয় উঠে আসে।
গবেষণার জন্য কেমন বরাদ্দ প্রয়োজন, তা যাচাই না করেই এভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। শিক্ষকদের মধ্যে যারা গবেষণায় আগ্রহী ছিলেন, তারা এতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। এটা এমন একটি একাডেমিক পরিবেশ তৈরি করেছে, যা কোনো সামাজিক প্রশংসা পায়নি।
রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেয় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
এতে আরো বলা হয়েছে, বিগত সরকারের শাসনামলে প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেয়া হতো। নতুন প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর অভাব ছিল। জাতীয় নির্বাচনের আগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি পেত, উন্নয়ন ব্যয় (বেশিরভাগ অবকাঠামো) প্রায় দ্বিগুণ হতো। এগুলো প্রমাণ করে কীভাবে রাজনৈতিক দুর্নীতি স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের প্রভাব বজায় রাখতে শিক্ষা খাত ব্যবহার করেছে।
শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠার পর উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) রাজনৈতিক শক্তির কাছে স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
কয়েক দশক ধরে ইউজিসি উচ্চশিক্ষা খাত নিয়ন্ত্রণে যে কোনো সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যাতে সরকার রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে। প্রতিবেদনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ইউজিসি তেমন কার্যকর নয় বলে মনে হচ্ছে।