ভারতের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে অবশেষে জয় পেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ম্যাচের সিরিজ নিশ্চিত করল টাইগাররা।
২৭২ রানের টার্গেট তাড়ায় ২৬৬ রানে ইনিংস গুটায় ভারত। শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে না পারায় লড়াই করেও হেরে যায় রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলটি।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৫ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি, শেখর ধাওয়ান, ওয়াশিংটন সুন্দর ও লোকেশ রাহুলের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ভারত।
পঞ্চম উইকেটে অক্ষর প্যাটেলকে সঙ্গে নিয়ে ১০১ বলে ১০৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখান শ্রেয়াস আইয়ার।দলীয় ১৭২ রানে ১০২ বলে ৮২ রান করে মেহেদি হাসান মিরাজের শিকারে পরিণত হন শ্রেয়াস।
শ্রেয়াস আইয়ার আউট হওয়ার ১৭ রান ব্যবধানে ফেরেন অক্ষর প্যাটেলও। তিনি ৫৬ বলে ৫৬ রান করে পেসার এবাদত হোসেনের শিকারে পরিণত হন।
দলীয় ৪২.৪ ওভারে ২০৭ রানে শার্দুল ঠাকুর আউট হলে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
বাংলাদেশের ইনিংসের সময়ে ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ লুফে নিতে গিয়ে বুড়ো আঙ্গুলে চোটাক্রান্ত হন রোহিত। সেই চোটের কারণে তাকে হাসপাতলেও যেতে হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে দলের পরাজয় নিশ্চিত দেখে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামেন রোহিত।
ইনিংসের শেষ দিকে রোহিত যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪৪ বলে ৬৫ রান। দলীয় ২১৩ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে দীপক চাহার আউট হওয়ার পর রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন রোহিত। ওই ওভারের শেষ চার বলে দুই ছক্কা আর এক চারে ১৮ রান আদায় করে নেন তিনি।
জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ সিরাজকে ৪৮তম ওভারে প্রথম পাঁচ বলে কোনো রান নিতে দেননি পেস বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। শেষ বলে রান নেওয়ার সুযোগ পেয়েও স্টাইক ধরে রাখার জন্য রান নেয়া থেকে বিরত থাকেন রোহিত।
শেষ ১২ বলে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের করা ৪৯তম ওভারের দ্বিতীয় ও পঞ্চম বলে রোহিত শর্মা দুইবার ক্যাচ তুলে দিয়ে এবাদত হোসেন ও এনামুল হক বিজয়ের কল্যাণে লাইফ পান। ওই ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজকে রিয়াদ আউট করলেও ২০ রান খরচ করেন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। মোস্তাফিজের করা ওভারের প্রথম বল ডট, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর চার হাঁকান রোহিত। চতুর্থ বল আবার ডট। পঞ্চ বলে ছক্কা হাঁকান রোহিত।
শেষ বলে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ৬ রান। রোহিত শর্মাকে ছক্কাই হাঁকাতে হতো। কিন্তু বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ইয়র্কার দিলে লক্ষ্য ভ্রষ্ট হন রোহিত। ৫ রানের উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
বুধবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদি হাসান মিরাজের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ।
সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১৬৫ বলে ১৪৮ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ২১৭ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। তার আগে ৯৬ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৭ রান করেন টি-টোয়েন্টি দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
রিয়াদ আউট হওয়ার পর নয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা নাসুম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ২৩ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো পার্টনারশিপ গড়েন মিরাজ। এই জুটিতেই মেইডেন সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। ৮৩ বলে ৮টি চার আর ৪টি ছক্কার সাহায্যে ক্যারিয়ার সেরা ১০০ রান করেন মিরাজ।