পরম ভালোবাসা-শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন প্রয়াত ভাস্কর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষক শামীম শিকদার। মৃত্যুকালে একুশে পদক প্রাপ্ত এ গুণী শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা প্রাঙ্গণের ভাষ্কর্য বিভাগের সামনে তার মরদেহ রাখা হলে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ শিল্পাঙ্গণের যুক্ত বন্ধু-স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিভিন্ন সংগঠন।
শ্রদ্ধা নিবেদনে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এমন একটি সময়ে শামীম শিকদার ভাস্কর্য চর্চা করেছিলেন সে সময় সমাজের কেউ এগিয়ে আসেনি। একজন নারী ভাস্কর হিসেবে তিনি বাংলাদেশ উপমহাদেশে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছে। শামীম সিকদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। এর বাইরেও তার একটি পরিচয় আছে, যা তাকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভাস্কর্য সারাদেশের সম্পদ। নান্দনিক মান বিচারে সেগুলো সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাঁর শিল্প কর্মগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাঁর ভাষ্কর্যের নান্দনিকতা যুগের পর যুগ ধরে তাঁর বার্তা দিয়ে যাবে।
চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান নাসিমা হক মিতু বলেন, তার অসমাপ্ত ভাস্কর্যগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে তিনি কাকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন, সে কথা আমরা জানি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার যে ভাস্কর্যগুলো রয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। যদি অন্যান্য ভাস্কর্য সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের দেয়া হয়, তবে দায়িত্ব নিয়ে আমরা ওই ভাস্কর্যগুলো সংরক্ষণের চেষ্টা করবো।
শামীম সিকদারের ছোট ভাই নাজমুল হক শিকদার বলেন, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে। শুক্রবার তার দুই ছেলেমেয়ে দেশে ফিরলে মরদেহ দাফন করা হবে মোহাম্মদপুরের পারিবারিক কবরস্থানে।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাজধানী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম শিকদার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি গত শতকের আশির দশকে চারুকলায় শিক্ষকতা শুরু করেন। অধ্যাপক হিসেবে অবসর নেয়ার পর ৮ বছর আগে তিনি ইংল্যান্ডে চলে যান। ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির পাশে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ভাস্কর্যটি তৈরি করেন শামীম সিকদার। জগন্নাথ হলের সামনে স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাস্কর্যটিও তারই করা। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক পান শামীম সিকদার।